
ছবি : সংগৃহীত
যমুনা নদীর তীরে গড়ে উঠছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন। ১,০৪২ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণাধীন এই প্রকল্পের বর্তমান অগ্রগতি ৭৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিচ্ছে। নয়টি প্রতিষ্ঠান ও দুজন শিল্পপতির যৌথ উদ্যোগে গঠিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ইতিমধ্যেই ১৪টি শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের কারখানা স্থাপনের জন্য ১১০ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে। প্রকল্পটির বিশেষত্ব হলো এর সুপরিকল্পিত অবকাঠামো - যেখানে শিল্প স্থাপনের জন্য ৬০ শতাংশ জমি বরাদ্দ রাখা হয়েছে, বাকি অংশে গড়ে তোলা হচ্ছে খেলার মাঠ, জলাধার, আধুনিক পানিশোধনাগার, বিনোদন কেন্দ্র, কারিগরি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট এবং হাসপাতাল।
এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর কৌশলগত অবস্থান। সড়ক, রেল ও নৌপথে পণ্য পরিবহনের সমন্বিত সুবিধা থাকায় এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালকরা জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে, যা শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। ইতিমধ্যেই দেশী-বিদেশী বহু শিল্প প্রতিষ্ঠান এখানে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে চালু করা হয়েছে ওয়ান স্টপ সার্ভিস, যার মাধ্যমে সব ধরনের অনুমোদন দ্রুততম সময়ে নেওয়া যাবে।
এই মেগা প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩,২০০ কোটি টাকা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে এটি কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে, যা উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্রই বদলে দেবে। স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ইতিমধ্যেই বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর আগামী বছরের মধ্যে উৎপাদন শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা জাতীয় উৎপাদনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন শুধু একটি শিল্পাঞ্চল নয়, বরং এটি হয়ে উঠছে উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন ইঞ্জিন।
আঁখি