ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

টিউলিপ পৃথিবীর যেকোনো আদালতে পলাতক হিসেবে বিবেচিত হবেন, আত্মসমর্পণের বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ১১:২০, ১৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১১:২৮, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

টিউলিপ পৃথিবীর যেকোনো আদালতে পলাতক হিসেবে বিবেচিত হবেন, আত্মসমর্পণের বিকল্প নেই

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের আদালত থেকে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সাবেক সদস্য ও শেখ হাসিনার ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা জমি অনিয়মিতভাবে অধিগ্রহণের অভিযোগে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোকে তিনি রাজনৈতিকভাবে প্ররোচিত বলে দাবি করেছেন। ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, এই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানেন না।

 

 

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়ায় টিউলিপ সিদ্দিক এখন আন্তর্জাতিকভাবে পলাতক আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, এরকম পরিস্থিতিতে আসামিকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। না করলে আদালত তার অনুপস্থিতিতে বিচার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা পৌঁছানোর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে - আসামির ঠিকানায় সরাসরি নোটিশ পাঠানো, রেকর্ডেড ডেলিভারি, গণমাধ্যমে প্রকাশ কিংবা গুরুতর অভিযোগের ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের সহায়তা নেওয়া। যদিও টিউলিপ দাবি করছেন তিনি পরোয়ানা সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানেন না, তবে আইনজীবীদের মতে, সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ায় তিনি এই পরোয়ানা সম্পর্কে অবগত বলেই ধরে নেওয়া হবে।

 

 

এই মামলার প্রেক্ষাপটে দুদকের সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা গেছে, তারা টিউলিপ সিদ্দিককে দেশে ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং ইন্টারপোলের সহায়তা চাইতে পারেন। তবে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় এই প্রক্রিয়া জটিল হতে পারে। টিউলিপ সিদ্দিকের পক্ষে বিদেশে বসে এই মামলায় সঠিকভাবে লড়াই করা কঠিন হবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। তাদের মতে, তাকে বাংলাদেশে ফিরে আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করতে হবে। না করলে আদালত তার অনুপস্থিতিতে বিচার চালিয়ে যেতে পারেন এবং দোষী সাব্যস্ত হলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

 

 

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই মামলা টিউলিপ সিদ্দিকের রাজনৈতিক ও আইনি অবস্থানকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। বাংলাদেশের আদালতের রায় মেনে তিনি যদি দেশে ফিরে আইনি লড়াইয়ে অংশ নেন, তাহলে তার পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ থাকবে। অন্যথায়, এই মামলা তার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে। টিউলিপ সিদ্দিকের আইনি টিম ইতিমধ্যেই এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রচারণা চালাচ্ছে, তবে দুদকের দাবি, তারা শুধুমাত্র আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করছেন। এই মামলার পরিণতি যাই হোক না কেন, এটি বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

আঁখি

×