
ছবি: সংগৃহীত
কলেজের প্রধান ফটকের সামনে একটি ফুল সজ্জিত গাড়ি প্রস্তুত। কলেজের ভবন থেকে গাড়ি পর্যন্ত ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কিছুক্ষণ পর শিক্ষক বের হয়ে এলেন এবং উঠে বসলেন গাড়িতে। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ও করতালি দিয়ে স্বাগত জানালো সবাই। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা তাদের পৌঁছে দিলো বাড়িতে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের দৃশ্য ছিল এমন। কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. রবিউল হক মিয়া দীর্ঘ কর্মজীবন শেষে অবসরে গেছেন। তাই প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব আয়োজন করেন। এ আয়োজন দেখে অবসরে যাওয়া ওই শিক্ষক আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
জানা যায়, আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রবিউল হক মিয়ার জন্য কলেজের পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শুরুতেই ফুলের মালা দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। তারপর স্মৃতিচারণমূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে বিদায়ী শিক্ষককে ক্রেস্টসহ বিভিন্ন উপহার তুলে দেওয়া হয়। শেষে ফুল সজ্জিত গাড়িতে ওই শিক্ষকের রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়। এসময় গাড়ির পিছুপিছু কলেজের সব শিক্ষকরাও মোটরসাইকেল যোগে ওই শিক্ষকের বাড়িতে যান।
স্মৃতিচারণ মূলক অনুষ্ঠানে কলেজের অধ্যক্ষ এম এম মুজিবুর রহমান মুজিবের সভাপতিত্বে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা বক্তব্য দেন।
বিদায়ী শিক্ষক মো. রবিউল হক মিয়া বলেন, আমাকে যেভাবে সম্মানের সাথে বিদায় দিয়েছে এটা আমার আমৃত্যু স্মরণ থাকবে। অনেক শাসন আদর করে এই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেছি। নানা প্রতিকূলতা ছিল। আমি চাই সবাই ভালো থাকুক। মাঝেমধ্যেই লেখাপড়ার খোঁজ নিতে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসব। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ।
আলফাডাঙ্গা আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ এম এম মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, শিক্ষক যখন তার চাকরিজীবন শেষে বাড়ি ফিরে যান তখন তিনি অনেক কষ্ট পান। সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের রেখে চলে যাওয়া খুব কষ্টের। বিদায়ের কষ্ট কিছুটা কমানোর জন্যই কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যতিক্রমী এমন আয়োজন করেছে। আমার ধারণা আলফাডাঙ্গা উপজেলায় এই প্রথম এমন উৎসবের বিদায়। প্রতিটি শিক্ষকের বিদায় এমন হওয়া উচিত।
আসিফ