
ছবিঃ সংগৃহীত
মাদারীপুরে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সীমাহীন ঘুষ-দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৫টায় শকুনি লেকের পাড়ে স্বাধীনতা অঙ্গনের সামনে প্রধান সড়কে বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিআরটিএ অফিসে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ‘দুর্নীতিবাজদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও, মাদারীপুরের মাটিতে দুর্নীতিবাজদের ঠাঁই নেই’সহ নানা স্লোগান দেয়। ব্যানার ফেস্টুন হাতে নিয়ে তারা দুর্নীতিবাজদের অপসারণ দাবীতে তিনদিনের আল্টিমেটাম দেয়। এ সকল দুর্নীতিবাজদের অপসারণ না করা হলে বিআরটিএ অফিস ঘেরাওসহ বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুশিয়ারি দেন তারা।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণের সাথে মানববন্ধনে একাত্মতা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরাও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাদারীপুরের ছাত্র প্রতিনিধিরা।
মাদারীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ বলেন, “আমি একটা নিউজ দেখলাম, ‘বিআরটিএর দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা বলছেন, যদি অনিয়ম নিয়ে একটা নিউজ হয় তাহলে মাদারীপুরের শত শত মানুষ আরও ভোগান্তিতে পড়বে, তিনি নাকি অনিয়ম নিয়ে নিউজ হলে একটা ফাইলও সাক্ষর করবেন না। এসময় মাসুম বিল্লাহ এ দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে হুশিয়ার করে বলেন, ‘আপনার আর কোন ফাইল সাক্ষর করার দরকার নেই, আপনি মাদারীপুর থেকে বিতারিত হন। তরুণ জনতাকে দূর্বল ভাববেন না। আমরা কিন্তু এর আগেও বিভিন্ন অনিয়ম দূর্নীতি নিয়ে আন্দোলন করেছি। ২৪ এর ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের জন্য রাজপথে ছিলাম তারা কিন্তু আমাদের সাথে পারেনি। তারাও কিন্ত দেশ ছেড়েছে।’
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ধ্রুবতারা পরিবারের সভাপতি রুবেল তালুকদার বলেন, ‘এই বৈরী আবহাওয়ার ভিতরেও আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি যা দূর্নীতিবাজদের প্রতি আমাদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এসময় তিনি আরও হুশিয়ার করে বলেন, সোমবারের মধ্যে যদি দুর্নীতিবাজদের বহিষ্কার না করা হয় বিআরটিএ অফিস ঘেরাও করব।’
পাশে আছি মাদারীপুরের সদস্য মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা নতুন প্রজন্ম জানি কিভাবে দুর্নীতিবাজদের কালো হাত ভেঙে দিতে হয়। ৭১ সালে যেমন তরুণ প্রজন্ম দাঁড়িয়েছিল এদেশের জন্য, ২০২৪ সালেও কিন্তু একইভাবে দাঁড়িয়েছিল দেশের জন্য। আপনাদের হুশিয়ার করে বলতে চাই দুর্নীতি বন্ধ করুন। এখনো সময় আছে পরিবর্তন হন, না হলে আপনাদের কালো হাত কিভাবে ভেঙে দিতে হয় তরুণ প্রজন্ম জানে।’
তারণ্য পরিবারের সভাপতি সোহাগ হাসান বলেন, ‘আজ আমরা দাঁড়িয়েছি বিআরটিএসহ বিভিন্ন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে। আগামী তিন কর্মদিবসের ভিতরে যদি বিআরটিএ কর্মকর্তাকে অপসারণ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যদি সাবধান না হয়; আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাবো।’
টিআইবির ইয়েস দলনেতা কামরুল হাসান বলেন, ‘দেশের তরুণ সন্তানেরা ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতনে বাধ্য করেছে, দুর্নীতিবাজদেরকে সাবধান করে বলতে চাই আপনাদের কালো হাত ভেঙে দিতে আমাদের একটু সময়ও লাগবে না, তিনি আরও হুশিয়ার করে বলেন, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের তিন কর্ম দিবসের মধ্যে বহিষ্কার করা না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনের ডাক দিবো।’
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ইখতিয়ার আহমেদ সাবিদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুর রহিম, মুখপাত্র তুষার সব্যসাচী, সহ মুখপাত্র জুবায়ের আহমেদ নাফি, স্বপ্নচূঁড়া তরুণ সংঘের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সানি প্রমুখ।
ইমরান