
ছবি: জনকণ্ঠ
রাজবাড়ী জেলার গ্রাম থেকে শহরের নানা এলাকায় এখন যেন এক স্বপ্নীল লালিমা ছড়িয়ে দিয়েছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। বৈশাখের প্রখর রোদে যখন প্রকৃতি কিছুটা রুক্ষ, তখনই কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুনে ঝলসে ওঠা পাপড়িগুলো যেন মানুষের মনে বয়ে আনছে এক মুহূর্তের প্রশান্তি ও আনন্দ।
সকালে কিংবা দুপুরে হোক, রাজবাড়ীর শহর ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে অনেকে দল বেঁধে ছুটে আসছেন কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে। কেউ কেউ প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে কাঁটাচ্ছেন কিছু আনন্দঘন সময়। আবার কেউবা ফুলের পেছনে স্মৃতি ধরে রাখতে ব্যস্ত ক্যামেরা হাতে। তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি মধ্যবয়সী মানুষদেরও দেখা গেছে কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় ছবি তুলতে কিংবা গল্পে মেতে উঠতে।
দুপুরের তীব্র রোদ উপেক্ষা করে পথচারী ও কৃষকদের কেউ কেউ গাছের নিচে কিছু সময় বিশ্রামে কাঁটিয়ে নিচ্ছেন। তবে বিকেল হতেই যেন ভিড় বেড়ে যায় কয়েকগুণ। শহরের পার্ক, স্কুল-কলেজ প্রাঙ্গণ, রাস্তার ধারে কিংবা খোলা মাঠে যেখানেই কৃষ্ণচূড়া, সেখানেই যেন মানুষের মেলা। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই উপভোগ করছেন ফুলের মিতালীতে।
স্থানীয় একাধিক প্রবীণ নাগরিকরা জানান, "প্রতি বছরই এই সময়টাতে কৃষ্ণচূড়ার এমন রঙিন দৃশ্য মন ভালো করে দেয়। এখন তো সবাই এসে ছবি তোলে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে। আমাদের সময় এমন সুযোগ ছিল না, তবে মনটা ঠিক একই ভাবে ভালো হয়ে যেত। তারা জানান, বৈশাখের বৃষ্টি বিহীন প্রখন্ড রোদে কৃষ্ণতলা এসে মন ও শরীর জড়িয়ে যায়। অনেক কৃষক গামছা বিছিয়ে এক বিশ্রাম নেয়। অনেকে ঘুম পারে।
বর্না নামের এক কিশোরী বলেন, স্কুল থেকে ফিরে আসার সময় কৃষ্ণতলায় একটু বিশ্বাম। এযেন আমার ও আমাদের প্রতিদিনের রুটিন। বিকেলে সময় পেলে মন ভালো করতে কৃষ্ণচুড়া গাছের নিচে আসার বিকল্প কি হতে পারে। তাই সময়-সুযোগ পেলে ছুটে আসি।
কৃষ্ণচূড়া যেন শুধু একটি ফুল নয়। এ যেন রাজবাড়ীর প্রকৃতির ভালোবাসার নিঃশব্দ ভাষা, যে ভাষায় মানুষ খুঁজে পায় আনন্দ, প্রশান্তি ও এক ধরনের আত্মিক যোগাযোগ। তবে পথচারী ও শতশত দর্শনাথীদের দাবি রেখে বলেন, জেলার বিভিন্ন মহাসড়ক-আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামের গুরুত্বপূর্ন সড়কে কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌনর্য ছড়ালেও বসে একটু সময় কাঁটানোর সুব্যবস্থা নেই।
সুতরাং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি রেখে বলেন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গার কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে বসার ব্যবস্থা করলে সাধারণ মানুষ আরোও উপকৃত হবেন।
শহীদ