ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিভিন্ন ভাতা দেওয়ার নাম করে যেভাবে কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন মৎস্য কর্মকর্তার পিয়ন

শাহ জালাল, সোনারগাঁও সংবাদদাতা, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭:৫৯, ১৬ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৮:০১, ১৬ এপ্রিল ২০২৫

বিভিন্ন ভাতা দেওয়ার নাম করে যেভাবে কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেন মৎস্য কর্মকর্তার পিয়ন

ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের পিয়ন মাহবুব আলম সুমন প্রতারণার মাধ্যমে কোটিপতি বনে গিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। 
আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল)  এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে এবং অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে যথোপযুক্ত শাস্তির দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।  

জানা গেছে, মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে বসে তিনি নিজেকে কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অভিনব প্রতারণা করে যাচ্ছেন পিয়ন মাহবুব আলম সুমন। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রত্যেক দরিদ্র ও অসহায়দের নগদ দুই লাখ টাকা করে দারিদ্র বিমোচনের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হবে। এ জন্য ফরম জমা দেওয়ার জন্য তাকে দিতে হবে ছয় হাজার টাকা করে। 

শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে জনপ্রতি ছয় হাজার টাকা করে এরই মধ্যে হাতিয়ে নিয়ে পাঠিয়েছেন একটি করে এসএমস। সেখানে লেখা- আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়েছে। খোঁজ  নিয়ে জানা গেল ওই ব্যাংকে কারো নামে কোন অ্যাকাউন্টই নেই। 

যে মোবাইল নম্বর দিয়ে মেসেজ দেওয়া হয়েছে সেটাও তাদের ব্যাংকের কোন ব্যক্তির নয়। এভাবে পিয়ন মাহবুব আলম সুমন সনমান্দি ইউনিয়ন থেকেই হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় দশ লাখ টাকা।

এতো গেল নগদ অনুদানের বিষয়। সব দপ্তরই তার হাতের মুঠোয় দাবি করে পাঁচ লাখ টাকার সরকারি ঘর পাইয়ে দিবে বলে জনপ্রতি নিয়েছেন আরও দেড় লাখ টাকা করে।  দুধ দেওয়া গাভি দেওয়ার কথা বলে নিয়েছেন জনপ্রতি পঞ্চাশ হাজার টাকা, বাদ যায়নি মাতৃত্বকালীন ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, খাদ্য ভাতার।

নানাবিধ ভাতার পসরা সাজিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন জনপ্রতি পঁচিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকা। কয়েকজনকে অবশ্য নিজের পকেট থেকেই দিয়েছেন কিছু নগদ অনুদান। আর এতেই তার প্রতারণার ফাঁদে পড়েন ভুক্তভোগীরা, খুইয়েছেন লাখ লাখ টাকা। 

পিয়ন মাহবুব আলম সুমন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েও দিব্যি অফিস করছেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেও কার্যত কিছু হচ্ছে না। 

তিনি সাংবাদিকদের জানান, ওই পিয়ন বদলি হওয়ার জন্য জোর তদবির চালাচ্ছে। সে আসলে একটা প্রতারক। প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।

এ ব্যাপারে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি- সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফারুক

×