
আধুনিকতার এই যুগে কমছে বইপ্রেমী মানুষের সংখ্যা। পাঠাগারও নেই বললেই চলে! তবে বাঞ্ছারামপুরের প্রত্যন্ত এক গ্রামে দেখা মিলে আধুনিক সজ্জিত এক পাঠাগারের। সেখানে থরে বিথরে সাজানো নানান বইয়ের সমাহার আর পরিবেশ মন কেড়ে নেয় যে কারোর। মনে হবে, বসে একটা বই পড়েই নেওয়া যাক।
উপজেলার পাড়াতলী গ্রামে ছোট্ট এক পুকুরধার ঘেঁষে পাঠাগারটির অবস্থান। ছায়ানিবিড় পরিবেশে এখানে বই পড়তে দেখা যায় শিশু, তরুণ আর বৃদ্ধদের। গল্পে-আড্ডায় তারা সময় কাটান শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ জ্ঞানগর্ভ আলোচনায়।
পাড়াতলী গ্রামের এই পাঠাগারটি গড়ে তুলেছেন মুন্সী বাড়ির লোকজন! ঢাকায় থাকা এই বাড়ির সরকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ আর গ্রামে থাকা মানুষদের শ্রম মিলিয়েই এমন উদ্যোগ! সবার সাড়াও মিলছে বেশ, বিশেষ করে বই পড়তে দল বেঁধে আসছে তরুণরা।
পাঠাগারে স্থান পেয়েছে এই উপজেলার লেখকদের বই। স্থানীয় লেখকদের কাছ থেকে বই সংগ্রহ করছেন পাঠাগারের উদ্যোক্তারা। অনেক কবি-লেখক এসে আড্ডাও দেন এখানে।
শিশুতোষ বই থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন লেখকদের বই রয়েছে এখানে।তরুণ প্রজন্মকে মানবসম্পদে গড়ে তোলা আর গ্রামে গ্রামে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটিই করছেন পাঠাগারের কারিগররা! তাদের চাওয়া, বই পড়ার অভ্যাসে সমাজে আসুক ইতিবাচক চিন্তাধারা। দেশ-জাতি হোক সমৃদ্ধ।
বই পড়তে আসা তরুণ আশরাফুল ইসলাম মারুফ বলেন, “গ্রামে আসলে লাইব্রেরি দেখাই যায় না। এত প্রতিবন্ধকতার মধ্যে এমন আধুনিক লাইব্রেরি সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। মনটা ফুরফুরে হয়ে গেছে এখানে এসে বই পড়ে।”
পাঠাগারের অন্যতম উদ্যোক্তা দেলোয়ার হোসেন অরণ্য বলেন, “আমরা চাই জ্ঞানের আলোয় চলুক এই সমাজ, মূর্খতার দিন শেষ। আগামী প্রজন্ম যেন আলোকিত এক সমাজ পায়, সব গ্রামে যেন এমন পাঠাগারের আয়োজন ছড়িয়ে পড়ে-সেই প্রত্যাশা নিয়েই এই উদ্যোগ। তরুণ লেখকদের উজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ আছে পাঠাগারে এসে। নিজেদের মধ্যে জ্ঞানে আদান-প্রদানে এক সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তুলতে চাই আমরা।”
আফরোজা