
ছবি : সংগৃহীত
গঙ্গার পাড়ে বসে পদ্মার ইলিশের স্বাদ নেওয়ার জন্য প্রতিবছরই মুখিয়ে থাকেন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরা। বিশেষ করে পহেলা বৈশাখ বা দুর্গাপূজার মতো উৎসবগুলোতে পদ্মার রুপালি ইলিশ তাদের পাতে উঠবে এই আশায় তারা থাকেন। কিন্তু এবার সেই আশা পূরণ হয়নি। বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি না হওয়ায় কলকাতার বাজারে পদ্মার ইলিশের দেখা মেলেনি। ফলে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার পুরনো ঐতিহ্য এবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার এবার ইলিশ রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যৌক্তিক কারণেই। মূলত পহেলা বৈশাখ থেকেই ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশের জলসীমায় ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মাছ ধরা নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। এই সময়টা নির্ধারণ করা হয়েছে ভারতের সঙ্গে সমন্বয় করে। আগে বাংলাদেশে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত। সেই সময়ে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় অবাধে মাছ ধরত। কিন্তু এবার সেই সুযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
এই সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশের জেলেরা যেমন লাভবান হচ্ছেন, তেমনি ভারতের বাজারে ইলিশের সরবরাহ কমে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিদের জন্য ইলিশ শুধু একটি মাছ নয়, এটি তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। বিশেষ করে উৎসবের সময়ে ইলিশ না পেলে তাদের উৎসবের আমেজটাই যেন কমে যায়। এবার পহেলা বৈশাখে ইলিশ না পেয়ে তারা বেশ হতাশ।
এই হতাশা ফুটে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। অনেকে লিখেছেন, পদ্মার ইলিশ ছাড়া বৈশাখের আনন্দই যেন পূর্ণ হয় না। কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলেছেন, এবার পাতে ইলিশ নেই, শুধু শুকনো হাত আর তেলহীন জিভ। অনেকে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্তকে অন্যায্য মনে করলেও বাস্তবে এটি একটি প্রয়োজনীয় ও টেকসই পদক্ষেপ।
ভবিষ্যতে যদি এই নিষেধাজ্ঞা চলতে থাকে তাহলে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে ইলিশের ঘাটতি আরও বাড়তে পারে। তবে প্রকৃতি ও মৎস্য সম্পদ রক্ষায় এই ধরনের নিয়ম জরুরি। ফিলহাল কলকাতার বাঙালিদের জন্য পদ্মার ইলিশের স্বাদ এখন শুধুই স্মৃতি। তাদের হতাশা যেন মিশে গেছে গঙ্গার জলে। তারা অপেক্ষায় আছেন কবে আবার পদ্মার সেই রুপালি ইলিশ তাদের পাতে ফিরে আসবে।
সূত্র:https://youtu.be/P-LlmusUoM4?si=ymwST6Vz_ICJBOsU
আঁখি