
সিআরবি শিরীষতলায় সংগীত পরিবেশনা
বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে সারাদেশে বাংলা নববর্ষ ১৪৩ কে বরণ করা হয়েছে। শোভাযাত্রার আকর্ষণ ছিল বর-বধূ, পালকি, ঢাকঢোলসহ নানা বাধ্যযন্ত্র। শোভাযাত্রায় স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে। পরে সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় বক্তারা হানাহানিমুক্ত সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের।
চট্টগ্রাম
নানা আনন্দ আয়োজনের মধ্য দিয়ে সোমবার চট্টগ্রামে বাংলা নববর্ষবরণ করেছে সর্বস্তরের মানুষ। সোমবার সকাল থেকেই নগরীর সিআরবি শিরিষতলা এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বর্ষবরণের নানা আয়োজন ছিল। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদের উদ্যোগে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় শিরিষতলায়। বর্ষবরণ ও বিদায়ে দুইদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা। সকালে ভায়োলিনিস্ট চিটাগংয়ের সমবেত বেহালা বাদনের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর পর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের দলীয় পরিবেশনা উপস্থাপন করেন সেখানে। সিআরবির আয়োজন ঘিরে প্রতিবছর পুরো এলাকায় লাখ লাখ মানুষ জমায়েত হয় বর্ষবরণের অনুষ্ঠান উপভোগে। সেখানে সোমবার দেখা গেছে জনসমাগম অনেক কম। রবিবার রাতে নগরীর ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের মঞ্চ ভাঙচুরের পর সেখানকার অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যায়। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মূলত ওই ঘটনার জেরে সিআরবির অনুষ্ঠানে লোকসমাগম কম হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৫টায় নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান শেষ হয় সিআরবিতে। দীর্ঘ ৪৬ বছর ধরে চলে আসা নগরীর প্রধান আয়োজন ডিসি হিলে এবার সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়নি হামলার ঘটনার প্রতিবাদে। সোমবার সকাল থেকে সাধারণ মানুষ না জেনে আবার অনেকে জেনেও নতুন জামা কাপড় পরে ডিসি হিলে উপস্থিত হন।
এদিকে নগরীর শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ষবরণ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একইভাবে নগরীর নন্দনকাননে শিশুদের সাংস্কৃতিক জগৎ ফুলকি আয়োজন করে ছোটদের বৈশাখী মেলা। অপরদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ নগরীর ইনস্টিটিউট থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। পরে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত চারুকলায় অনুষ্ঠিত হয় সংগীত অনুষ্ঠান।
রাজশাহী
সোমবার সকালে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ও বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনটিকে স্বাগত জানায় রাজশাহীবাসী।
এদিন সকাল ৭টায় নগরীর সিএন্ডবি মোড় থেকে শিশু একাডেমি পর্যন্ত ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ বের করে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। বর্ণিল সাজে সে শোভাযাত্রায় অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ। শোভাযাত্রা শেষে শিশু একাডেমিতে পরিবেশন করা হয় জাতীয় সংগীত ও বর্ষবরণের গান ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’। সকাল পৌনে ৮টায় একই স্থানে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের মহাপরিচালক আ. রাজ্জাক সরকারসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধŸতন কর্মকর্তাবৃন্দ অনুষ্ঠানে আগত সর্বসাধারণকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। আলোচনা শেষে বর্ষবরণ উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি এবং শিশু একাডেমি আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রামবাংলা ও বাঙালিদের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরতে শিশু একাডেমি চত্বরে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার স্টলগুলোতে মৃৎশিল্প, কুটির শিল্প, পাটজাত পণ্য, পোশাক ও ঐতিহ্যবাহী খাবার প্রদর্শন ও বিক্রিয় করা হয়। এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রুয়েট, রাজশাহী কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়।
খুলনা
সোমবার সকাল ৮টায় খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে রেলওয়ে স্টেশন প্রাঙ্গণ থেকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহিদ হাদিস পার্কে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এরপর নগরীর শহিদ হাদিস পার্কে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার বলেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য ও সর্বজনীন উৎসব। বাঙালির লোকসংস্কৃতির সঙ্গে বাংলা নববর্ষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (শিক্ষা ও আইসিটি) দেবপ্রসাদ পাল, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ছয়টায় নগরীর বড় মাঠের টেনিস গ্রাউন্ডে এসো হে বৈশাখ এসো এসো গানের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে উদীচী খুলনা।এদিকে, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ। দিনব্যাপী নানা আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার বরণ করে নেয় বাংলা নতুন বছরকে। সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম।
খাগড়াছড়ি
সাংগ্রাই শোভাযাত্রা ও জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে খাগড়াছড়িতে উদযাপিত হয় মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই উ্ৎসব। বর্ণিল আয়োজনে উৎসবে মাতোয়ারা মারমা জনগোষ্ঠী। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় আনন্দের রং ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তরুণ তরুণী, যুবক ও যুবতীরা সামনের দিনগুলোতে অনাবিল সুখ আর শান্তি কামনায় পানি খেলায় অংশ নেয়। উৎসবে বাঁধভাঙা আনন্দে মাতোয়ারা মারমা তরুণ-তরুণীরা।
অনুষ্ঠানে সনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আমান হাসান, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েলসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল
সকাল গড়াতেই শহরের অলিগলি থেকে শুরু করে প্রধান সড়ক, পার্ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড় ছিল। সব বয়সের নারী-পুরুষ একসঙ্গে বৈশাখের উৎসবে মেতে ওঠে। দিনভর চলে প্রাণের এ উৎসব।
সকাল ৯টায় বরিশাল সার্কিট হাউজ থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হাতে মুখোশ, কাঁধে ঢাক-ঢোল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। মঞ্চে গান, কবিতা, নৃত্য আর পটচিত্রে ভরপুর হয় সার্কিট হাউস চত্বর ও বেলস পার্ক। ‘নববর্ষের ঐক্যতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’ স্লোগানে মুখর ছিল গোটা বরিশাল। আর গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি হিসেবে পালকি, চাষি, জেলে আর ঐতিহ্যবাহী সরঞ্জামগুলোর ছিল প্রধান প্রদর্শনী।
বৈশাখ মানেই যেন পান্তা-ইলিশ আর সংস্কৃতির বন্ধন। তাই নগরীর রেস্টুরেন্টগুলোতে আয়োজন করা হয়েছিল বৈশাখী স্পেশাল মেন্যু। ইলিশ-পান্তা, বেগুন ভাজি, খেজুরের পায়েসে জমে ওঠে বৈশাখের স্বাদ। অনেকেই পরিবারসহ হোটেলে কিংবা বাড়িতে আয়োজন করেন দিনব্যাপী ভোজ।
সাংস্কৃতিক আয়োজনে রঙ ছড়াতে বরিশাল নগরীর বেলস পার্কে স্থাপন করা হয় প্রায় অর্ধশত স্টল। যেখানে লোকজ শিল্প, পণ্য ও খাবারের সমাহার ছিল।
ময়মনসিংহ
বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদের উদ্যোগে সোমবার সকালে নগরীর রেলওয়ে স্টেশনের কৃষ্ণচূড়া চত্বর থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রধান সড়ক হয়ে ব্রহ্মপুত্র পারের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের পার্কের হিমু আড্ডায় গিয়ে শেষ হয়। পরে এখানে শত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ এসো গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিচিত্রা অনুষ্ঠান। নাচ, গান, আবৃত্তিসহ বিচিত্রানুষ্ঠান চলে দুপুর পর্যন্ত। এর আগে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে প্রধান সড়ক হয়ে জয়নুল উদ্যানের বৈশাখী মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনার আয়োজন করে। আনন্দ শোভাযাত্রা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও সোমবার দিনব্যাপী চলে বৈশাখী মেলা। ময়মনসিংহের পুরনো ব্রহ্মপুত্র পারের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভেতর ও সার্কিট হাউস মাঠের পাশে আয়োজিত এই বৈশাখী মেলার শত শত স্টলে মাটির তৈরি হাঁড়ি পাতিল, পুতুল, হাতি ঘোড়া, তৈজসপত্র, খেলনা বেচা বিক্রির ধুম ছিল। ভিড় ছিল নাগরদোলা ও চরকিসহ বিনোদনের বিভিন্ন স্পটে। পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপনে হাজারো মানুষের ঢলে মুখর ছিল ব্রহ্মপুত্র পারের ময়মনসিংহ।
বগুড়া
সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহরে শোভাযাত্রা বের হয়। এতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা, পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা, জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে অংশ নেয়। শহরের সাতমাথায় দিন বদলের মঞ্চ আয়োজিত বর্ষবরণ উৎসবের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তৌফিকুল আলম টিপু। এখানে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। পরে বগুড়া জেলা বিএনপির আয়োজনে শহরে বর্ণিল শোভাযাত্রা বের হয়।
কুমিল্লা
কুমিল্লায় নববর্ষে শহীদ মুগ্ধ স্মরণে তৃষ্ণার্ত মানুষকে পানি বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ও এনসিপি কুমিল্লা মহানগর শাখা। কুমিল্লা সিটি পার্কে শহীদ মুগ্ধ গ্যালারিতে ১০ হাজার মানুষের জন্য বোতলজাত পানি সংরক্ষণ ও বিতরণ করা হয়। বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষে সকাল থেকে শোভাযাত্রাসহ নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে নগরজুড়ে। কুমিল্লা নগরজুড়ে সবর্জনীন উৎসবে মেতে ওঠে নগরবাসী।
নীলফামারী
জেলাজুড়ে নতুন বাংলা বছরকে (১৪৩২) বরণ করে নিতে দিনভর নানান আয়োজন ছিল। এ উৎসবে বাদ পড়েনি নীলফামারী জেলা কারাগারের ৩৫১ কারাবন্দিও। বর্ষবরণে কারা অভ্যন্তরকে সাজানো হয় বর্ণিলভাবে। শুধু সাজানো নয়, রীতিমতো তিনভর বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ এবং সাংসাকৃতিক অনুষ্ঠানেও কারারক্ষীরা অংশগ্রহণ করে।
নড়াইল
সোমবার সকালে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদ ১৪৩২ এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক লিংকন বিশ্বাস, বর্ষবরণ উদযাপন পর্ষদের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ইশতিয়াক হোসেন মঞ্জু, সদস্য সচিব আ ন ম নজমুল হকসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
নওগাঁ
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সোমবার সকাল ৮টায় শহরের এটিম মাঠ থেকে ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা’ এই স্লোগানে বের করা হয় একটি আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটির নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
রংপুর
বর্ষবরণের উৎসবে যোগ দেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম, রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী, জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল, জেলা পুলিশ সুপার আবু সাইমসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি করেন শিল্পীরা। এর পর জিলা স্কুলের সম্মুখে বেলুন উড়িয়ে বর্ষবরণের মূল আকর্ষণ আনন্দ শোভাযাত্রার উদ্বোধন করা হয়।
ঝিনাইদহ
সোমবার সকাল ৮টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর থেকে বের হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। নানা রঙের ব্যানার, মুখোশ, ঢাক-ঢোল ও ঐতিহ্যবাহী বাংলার নানা প্রতীক নিয়ে হাজারো মানুষ অংশ নেয় এই শোভাযাত্রায়। এতে অংশ নেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, পুলিশ সুপার মঞ্জুর মোর্শেদসহ সরকারি কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পশার মানুষ।
ঠাকুরগাঁও
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে কালেক্টরেট চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে বৈশাখী মেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানার নেতৃত্বে শোভাযাত্রায় ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়িসহ গ্রামীণ কৃষ্টিকালচারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ জেলার বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃকিত সংগঠন এবং শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
নরসিংদী
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউস থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং শোভাযাত্রাটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় র্যালিতে অংশ নেয় জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, নরসিংদী প্রেস ক্লাব, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত ও এসো হে বৈশাখ গানের মাধ্যমে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়া হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান, সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ আমীরুল হক শামীম, নরসিংদী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. নূরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল বাছেদ ভূইয়া, মো. হারুন-অর রশিদ হারুন।
শেরপুর
সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান। শোভাযাত্রায় পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম, জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জেবুন নাহার শাম্মী, স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও শেরপুর পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স, জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জাকারিয়া মো. আব্দুল বাতেন প্রমুখ।
মৌলভীবাজার
সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে বাংলা নববর্ষের ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’ র্যালি বের হয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়।
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ইসরাইল হোসেন, পুলিশ সুপার এম. কে.এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তানভীর হোসেন, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক বুলবুল আহমেদ, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজ উদ্দিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করীম ময়ূন, মৌলভীবাজার আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক আইনজীবী মুজিবুর রহমান মুজিবসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
টাঙ্গাইল
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সোমবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন ‘জনসেবা চত্বর’ এ জাতীয় সংগীত ও বৈশাখের গান ‘এসো হে বৈশাখ’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদযাপনের কর্মসূচি শুরু করা হয়।
এদিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুইরায় জনসেবা চত্বরে এসে শেষ হয়। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে জনসেবা চত্বরে ‘বৈশাখী মেলা’র উদ্বোধন করেন। এ সময় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, টাঙ্গাইলের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শিহাব রায়হান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল্যাহ আল মামুন প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।
লক্ষ্মীপুর
সোমবার সকালে আনন্দ শোভাযাত্রা লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত হয় বর্ষবরণ সাংস্কৃতিক লোকজ অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার, বিশেষ অতিথি ছিলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আকতার হোসেন। অতিরিক্ত জেলা (প্রশাসক সার্বিক) জেপি দেওয়ানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, সিভিল সার্জন ডা. আবু হোসেন শাহীন, পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ আলম রানা প্রমুখ।
রাঙামাটি
সোমবার সকালে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। শোভাযাত্রাটি রাঙামাটি পৌরসভা প্রাঙ্গণে শুভ উদ্বোধন করেছেন রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। এই সময়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার ড. ফরহাদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. মনসুরুল হকসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজন।
মাগুরা
জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে শহরে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। কালেক্টরেট প্রাঙ্গণ থেকে নানা বাদ্যযন্ত্রসহকারে র্যালি শুরু সমগ্র শহর প্রদক্ষিণ করে নোমানী ময়দানে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলামসহ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।
বান্দরবান
সোমবার সকাল ৮টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ঐতিহ্যবাহী শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক মিলনায়তনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় আনন্দ শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই। বিশেষ অতিথি ছিলেন, জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাউছার। এছাড়াও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী, সাংস্কৃতিক দলসহ সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গা
সোমবার সকাল ৮টায় বিশাল আনন্দ শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে নেতৃত্ব দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। শোভাযাত্রায় অংশ নেন পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সিভিল সার্জন হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদসহ সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা।
ঝালকাঠি
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় শিশুপার্কে এসে শেষ হয়। র্যালিতে কৃষকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন তাদের আঙ্গিকে সাজসজ্জার আবরণ নিয়ে অংশগ্রহণ করে অনুরূপভাবে স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীরাও পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে র্যালিতে অংশগ্রহণ করে। জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান ও পুলিশ সুপার উজ্জল কুমার রায়সহ প্রশাসন স্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শিশু পার্কে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বৈশাখী মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।
বাগেরহাট
মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতাসহ নানা আয়োজনে বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছর ১৪৩২ কে বরণ করল বাগেরহাটবাসী। এ উপলক্ষে সোমবার বাগেরহাটে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা স্টেডিয়াম থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহরের জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল আরিফ।
ভোলা
সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। পড়ে সেখানে আনন্দমুখর পরিবেশে পান্তা ইলিশ খাওয়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন শিল্পীরা। এ সময় রংবেরঙের নানা সাজে সজ্জিত হয়ে শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নানা শ্রেণি পেশার মানুষ নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে। এ সময় অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান, পুলিশ সুপার মো. শরিফুল হক, জেলা বিএনপি আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর
সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ফরিদপুর সাহিত্য ও সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার চত্বরে স্বাধীনতা মঞ্চে সংগীত অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় নববর্ষের অনুষ্ঠানমালার। সংস্থাটির আয়োজনে মঞ্চে কবিতা আবৃত্তি, দেশাত্মবোধক গান, রবীন্দ্র সংগীত, ফলাহারসহ ছিল নানা আয়োজন। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। আনন্দ শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় অম্বিকা ময়দানে নববর্ষের মিলনমেলায় সমবেত হয়। সেখানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল।
প্যানেল