ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

দুর্গাপুরে বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা

নিজস্ব সংবাদদাতা দুর্গাপুর ,নেত্রকোনা

প্রকাশিত: ১৯:৫০, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

দুর্গাপুরে বর্ষবরণ উপলক্ষে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা

সভ্যতার ক্রমবিকাশ আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা। শৈশবে যেসব খেলাধুলা দেখাগেছে, বর্তমানে সেসব খেলাধুলা না দেখতে পেয়ে সমাজের প্রবীণগণ এখন ভুলে গেছেন বহু খেলার নাম। এক সময় গ্রামের শিশু ও যুবকরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় অভ্যস্ত ছিল। কিন্তু মাঠ-বিল-ঝিল হারিয়ে যাওয়ায়, আধুনিক সভ্যতার ছোঁয়া ও কালের বিবর্তনে মহাকালের ইতিহাস থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এসব খেলাধুলা। তবে এবার ব্যক্তি উদ্যোগে আয়োজন। বাংলানববর্ষ উপলক্ষে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উড়ানো উৎসব, তেল মাখানো কলা গাছে আরোহণ, হাডুডু খেলা।

ঘুড়ি উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে আজ মঙ্গল বার (১৫এপ্রিল) বিকেলে পৌরশহরের তেরীবাজার এলাকার সোমেশ্বরী নদীর চরে এসব গ্রামীণ খেলার আয়োজন করা হয়। এতে উপজেলার ব্যাপক মানুষ ভিড় জমায় সেই ঐতিহ্যবাহী খেলা দেখার জন্য। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, খেলা দেখতে শিশু থেকে শুরু করে নানান শ্রেণী পেশার হাজারো মানুষ জড়ো হয়েছে সেখানে। ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলোর মধ্যে, ঘুড়ি উড়ানো, তেল মাখানো কলাগাছ আরোহণ ও হাডুডু খেলা। খেলায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

নববর্ষ উপলক্ষে খেলা দেখতে আসা আব্দুর রহমান বলেন, এসব খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এই খেলাগুলো গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। আজকে এই খেলার আয়োজন দেখে প্রায় ১৫ বছর আগের কথা মনে পড়ে গেছে। আয়োজকদের আহবান জানাই প্রতিবছরই যেনো আয়োজন করেন এই খেলা।

রুনা আক্তার নামের আরেকজন বলেন, আমার বয়স ২১ বছর। আমার জন্মের পর আমি এই খেলা গুলো দেখেনি। এই প্রথম আমি এইসব ঐতিহ্যবাহী খেলা নিজ চোখে দেখতে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে। নতুন প্রজন্মের জন্য এসব খেলা টিকিয়ে রাখা উচিত।

চন্ডিগড়গ্রাম থেকে আসা হাডুডু খেলার প্রতিযোগী সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি ১৯৯৬ সালে শেষবার এই ঐতিহ্যবাহী হাডুডু খেলা খেলেছিলাম, এরপর আর কখনও খেলা হয়নি। এখানকার সময়ে আমাদের সন্তানেরা এই খেলা সম্পর্কে কিছুই জানেনা। এতো বছর পর এই খেলায় অংশ নিতে পেরে আনন্দিত।

উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি মনজুরুল ইসলাম (মঞ্জু)বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা গুলো যেন হারিয়ে না যায়, এজন্য নিজ উদ্যোগে খেলার আয়োজন করেছি। এবার দুইদিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লোকজ মেলার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে বর্ষবরণ। এছাড়া স্থানীয় সাহিত্য সংগঠন পথ পাঠাগারের আয়োজনে শিশু শিক্ষার্থীদের নিয়ে চিত্রাংকন ও ঘুড়ি আঁকানো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবারের নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানে।

 

রাজু

×