ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

পাঁচ মাসে বকেয়া আমদানি বিল ৪৪৫ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৮৮ মিলিয়ন ডলার

প্রকাশিত: ১০:২৫, ১৫ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১০:৩৮, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

পাঁচ মাসে বকেয়া আমদানি বিল ৪৪৫ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৮৮ মিলিয়ন ডলার

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর তদারকি ও কার্যকর ব্যবস্থাপনার ফলে গত পাঁচ মাসে দেশের ব্যাংকিং খাতে আমদানি বিলের বকেয়া পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিদেশি ব্যাংকগুলোর কাছে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা আমদানি বিলের বকেয়া ৪৪৫ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৮৮ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এই সাফল্য অর্জনে বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিত মনিটরিং, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সাথে বৈঠক এবং সুনির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার মতো কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

 

আজ (১৩ এপ্রিল) জারিকৃত এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক সকল ব্যাংককে বিদেশি ও স্থানীয় উভয় ধরনের আমদানি বিলের বকেয়া নিষ্পত্তি কঠোরভাবে মনিটরিং করার নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি অনলাইন ইমপোর্ট মনিটরিং সিস্টেম (OIMS)-এর মাধ্যমে মাসিক রিপোর্ট জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। সার্কুলারে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সময়মতো আমদানি বিল নিষ্পত্তি না করলে তা দেশের ব্যাংকিং খাতের সুনামকে ক্ষুণ্ণ করে এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ নষ্ট করার পাশাপাশি আমদানি খরচ বৃদ্ধি করে।

 

 

ফরেন এক্সচেঞ্জ ট্রানজেকশন গাইডলাইনস (GFET) ২০১৮-এর আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক অথোরাইজড ডিলার (AD) ব্যাংকগুলোকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমদানি বিল নিষ্পত্তি করতে বাধ্য করেছে। এই নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট AD শাখার লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগতভাবে জবাবদিহি করতে হতে পারে।

 

নভেম্বর ২০২৩ শেষে বিদেশি আমদানি বিলের বকেয়া ৪৪৫ মিলিয়ন ডলার থাকলেও কঠোর তদারকির ফলে ২০২৪ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে তা ২০০ মিলিয়ন ডলারে এবং বর্তমানে ৮৮ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। একইভাবে ব্যাংক-টু-ব্যাংক লেটার অব ক্রেডিটের আওতাধীন স্থানীয় বকেয়া নভেম্বরে ৩১১ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ১৫৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

এই অগ্রগতি ধরে রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক আরও কিছু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে সর্বোচ্চ বকেয়াযুক্ত ১০টি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে নিয়মিত দ্বি-মাসিক বৈঠক, সমন্বিত অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন এবং বিশেষ মনিটরিং ব্যবস্থা চালু করা। আইনি জটিলতায় আটকে থাকা বিলের ক্ষেত্রে সরবরাহকারী ব্যাংককে অবহিত করতে বলা হয়েছে।

 

 

পাশাপাশি AD শাখাগুলোকে মাসিক ভিত্তিতে আমদানি বিল সংক্রান্ত যেকোনো অসঙ্গতি হেড অফিসে রিপোর্ট করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সমন্বিত প্রচেষ্টা দেশের ব্যাংকিং খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন

আঁখি

×