
ফরিদপুরে ছয় বস্তা সার নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। জেলার কানাইপুর বাজারে ওই সার বিক্রি করতে আসা ব্যক্তিকে চ্যালেঞ্জ করলে সে পালিয়ে যায়, পরে স্থানীয় জনতা প্রশাসনকে খবর দিয়ে তাদের নিকট সার বুঝিয়ে দেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সারের মালিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম থেকে সার আনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ভ্যান চালক স্থানীয়দের জানিয়েছেন। বর্তমানে সারগুলো ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে রয়েছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় বাবু সরদারসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা আড়াইটার দিকে কানাইপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আস্থাভাজন মো. ইউনুস নামের এক ব্যক্তি, ভ্যানযোগে তিন বস্তা ইউরিয়া ও তিন বস্তা ডিএপি সার কানাইপুরের সার ব্যবসায়ী সুদীপ কুমার দত্তের মালিকানাধীন মনোরমা এন্টারপ্রাইজে এনে বিক্রির চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই ব্যবসায়ীর সন্দেহ হলে সার কিনতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় বাবু সরদারসহ স্থানীয়রা সারের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে ইউনুস পালিয়ে যায়।
পরে তারা কোতোয়ালি পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করলে, সার জব্দ করে উপজেলা প্রশাসন।স্থানীয়রা দাবি করেন, কয়েকদিন আগে পাট চাষীদের মধ্যে কিছু সার বিতরণ করা হয়। এই সার তারই অংশ বিশেষ হতে পারে।
জেলার পাট অধিদপ্তরের উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম জানান, এবছর কানাইপুর ইউনিয়নের দুইশ ৪০ জন কৃষককে জনপ্রতি ১২ কেজি করে সার বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ০৬ এপ্রিল প্রায় দুইশ জন কৃষকের মাঝে বণ্টনও করা হয়। কিন্তু বাকি চাষীরা সার নিতে না আসায় তা কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের মজুদ রাখা হয়। তবে এই সার সেই সার কিনা তা জানাতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ মো. আলতাফ হুসাইন বলেন, নববর্ষের বন্ধ থাকায় ওই সার ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম থেকে আনা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি দাবি করেন, গুদামের চাবি ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের নিকট থাকায় মঙ্গলবার অফিস খুললে গুদামের হিসাব মিলালে বোঝা যাবে। সার বিক্রি করতে আসা ইউনুস তার (চেয়ারম্যান) ঘনিষ্ঠজন নয় দাবি করে বলেন, সে আমার এলাকার একজন ভোটার মাত্র। নাগরিক হিসেবেই চিনি, এর বাইরে কোনো সম্পর্ক নেই। তবে তিনি দাবি করে বলেন, নাম আলোচনায় আসায় আমি তাকে (ইউনুস) জিজ্ঞাসা করেছিলাম, সে বলেছে যে সার বিক্রি করতে সে (ইউনুস) আসেনি।
এদিকে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে কৃষি কর্মকর্তা ও পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং সারগুলো জব্দ করে নিয়ে আসা হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মালিকানা নিশ্চিত হতে কাজ করছে প্রশাসন। তিনি জানান, তদন্ত করে পরবর্তীতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আফরোজা