ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

কুষ্টিয়ার মিরপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী মহিষের গাড়িতে বৈশাখী আনন্দ শোভাযাত্রা

নিজস্ব সংবাদদাতা, মিরপুর, কুষ্টিয়া 

প্রকাশিত: ০২:১৭, ১৫ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০২:১৭, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

কুষ্টিয়ার মিরপুরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী মহিষের গাড়িতে বৈশাখী আনন্দ শোভাযাত্রা

ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপনে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো জমজমাট বৈশাখী উৎসব।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল পৌনে ৯টায় জাতীয় সংগীত ও "এসো হে বৈশাখ" গানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলামের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা। এই শোভাযাত্রায় নানারকম বাঙালি ঐতিহ্য দেখা যায়। তার মধ্যে অন্যতম ছিলো গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী মহিষের গাড়ি।

এক সময় গ্রামীণ বাঙালির জীবনে মহিষের গাড়ি ছিল খুবই পরিচিত। ধান, গাছের গুঁড়ি বা হাটে মালামাল নিয়ে যাওয়ার কাজে মহিষের গাড়ির ব্যবহার হতো নিয়মিত। কিন্তু যন্ত্রচালিত বাহনের আগমনে এটি এখন শুধুই স্মৃতি। নতুন প্রজন্মের অনেকে জানেই না কিভাবে এই মহিষের গাড়ি রাস্তায় চলে।

তবে ১৪৩২ এর পহেলা বৈশাখে কুষ্টিয়ার মিরপুরে আবার দেখা মেলে সেই পুরোনো ঐতিহ্যের। ৪০ টিরও বেশি মহিষের গাড়ি অংশ নেয় এই শোভাযাত্রায়। রঙিন কাপড়, বেলুন ও আলপনায় সাজানো মহিষের গাড়িতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিজে চড়েন এবং তার সাথে মিরপুর উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা ও সাধারণ জনগণসহ বিভিন্ন গ্রামীণ ঐতিহ্যের সাজে সজ্জিত শিশু-কিশোরেরা চড়ে উৎসব উপভোগ করে। এভাবেই হারিয়ে যাওয়া এক স্মৃতি ফিরে আসে বৈশাখী উৎসবের অনুষঙ্গে।

শোভাযাত্রায় আরও অংশ নেয় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দসহ উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার জনগণ। শোভাযাত্রাটি মিরপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে শুরু হয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে শেষ হয়।

শোভাযাত্রা শেষে শিশুদের সঙ্গে কেক কেটে নববর্ষের আনন্দ ভাগাভাগি করেন ইউএনও। এরপর অনুষ্ঠিত হয় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা, যেখানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল ইসলাম, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও মিরপুর নতুন বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহ আক্তার মামুন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নজরুল করিম, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ রহমত আলী রব্বান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুষ্টিয়া জেলা শাখার সদস্য সুলতান মাহমুদ ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ মারফত আফ্রিদি। এসময় বক্তারা বাংলা সংস্কৃতির সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য তুলে ধরেন।

আয়োজনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মিরপুর শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বাংলার আরেক ঐতিহ্য পুতুলনাচ। পাশাপাশি বৈশাখী মেলায় ১৬টি স্টলে প্রদর্শিত হয় হস্তশিল্প, নকশী পিঠা, গ্রামীণ পণ্য ও বাহারি পোশাক, যা দর্শনার্থীদের দারুণভাবে আকর্ষণ করে।

পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও উৎসবমুখর পরিবেশ।

ইমরান

×