
এক সময় বাঙালির বিয়েতে পালকী ছিল অপরিহার্য অনুষঙ্গ। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী এই বাহনটি ছিল কনের শোভাযাত্রার প্রধান আকর্ষণ। লাল-সবুজে রঙিন পালকী, বেহারার গানের তালে কনের শ্বশুরবাড়ির পথে যাত্রা—এই দৃশ্য ছিল এক অপূর্ব রূপকথার মতো।
কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে মোটরগাড়ি, মাইক্রোবাস কিংবা লাক্সারি কার। এখন বিয়ের অনুষ্ঠানে পালকী দেখা যায় না বললেই চলে।
তবে পহেলা বৈশাখে রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকায় আবারও দেখা মেলে সেই পালকীর। যদিও তা বিয়ের জন্য নয়, উৎসবের অনুষঙ্গ হিসেবে। শিশুরা খেলনার মতো করে ওই পালকীতে বসে, কেউবা সাজে বর-কনে, কেউ রঙিন পোশাকে আনন্দে মাতোয়ারা। তাদের ঘিরে চলে গান, নাচ, উৎসবের আমেজ। বেহারারা গেয়ে ওঠেন— “পালকী চলে ধীরে ধীরে, বউ নিয়ে যায় পাড়া ঘুরে।”
পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী, রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ—এ জেলার প্রায় সব এলাকাতেই দেখা মেলে এমন বৈশাখী আয়োজনের। স্থানীয়রা জানান, নতুন প্রজন্মকে গ্রামীণ ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করাতেই এমন আয়োজন।
সকাল থেকেই নানা এলাকার রাস্তায় বের হয় র্যালি। শুধু পালকী নয়, গ্রামের সাজে নানা বয়সী নারী-পুরুষ র্যালিতে অংশ নেয়। যেন পুরো এলাকাই একদিনের জন্য ফিরে যায় অতীতে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুল রহমান বলেন, “পহেলা বৈশাখ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে একত্র করে। এই আয়োজন আমাদের মনে করিয়ে দেয় বাংলার লুকিয়ে থাকা ঐতিহ্যের স্বাদ।”
নুসরাত