ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

বিদ্রোহের কবির অন্তর্জগতে: এক নজরুলভক্তের মনের কথা

প্রদীপ কুমার রায়,  রায়পুর, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ২২:৩৮, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

বিদ্রোহের কবির অন্তর্জগতে: এক নজরুলভক্তের মনের কথা

ছবি: জনকণ্ঠ

কাজী নজরুল ইসলাম। এই নামটি শুনলেই মনে পড়ে এক অগ্নিঝরা উচ্চারণে, “চির উন্নত মম শির!” বিদ্রোহ, দ্রোহ, মুক্তির চেতনা এসবই যেন তাঁর চেহারার স্থায়ী ছাপ। কিন্তু আমি, একজন একনিষ্ঠ নজরুলভক্ত, জানি এই বজ্রকণ্ঠ কবির অন্তরে ছিল শিশুর মতো কোমলতা, হাস্যরস আর অনাবিল জীবনপ্রেম।

নজরুল শুধু কবি নন, এক আশ্চর্য জীবনের প্রতীক। তিনি নিয়মে বাঁধা ছিলেন না, জীবনকে ছুটে ছুটে ছুঁয়েছেন। গানের ছন্দে, চায়ের কাপে, আড্ডার গল্পে, বন্ধুদের হাসিতে তিনি ছিলেন উদ্বেল। নিজের জীবনের সমস্ত সংকটকেও তিনি শিল্পের ফ্রেমে বুনে নিয়েছেন।

এই মানুষটাই কিনা হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে ধর্মগ্রন্থ পাঠ করতেন, আবার নাম রেখেছিলেন ছেলেদের সানি আর নিনি! এমন বিপুল বৈপরীত্যে তিনি ছিলেন এক অখণ্ড স্বর।

আমি তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাঁচতে চাই। সাহসী হতে চাই, আবার কোমলও। বন্ধুবান্ধবের জন্য উজাড় করে দিতে চাই মন, অর্থ, ভালোবাসা। সমাজের ভাঙন ঠেকাতে চাই তাঁর মতোই হাসি, ছড়া আর বিদ্রোহে। মনে হয়, যদি কোনোদিন তাঁর হাতে হাত রাখার সুযোগ পেতাম, বলতেন “ভয় কিসের? চলো, গান গাই!”

আমার কাছে নজরুল শুধু এক কবি নন, আমার পথের প্রদীপ। তাঁর হাসিতে আমি শুনি এক গোপন ব্যথার গান, আবার তাঁর কবিতায় খুঁজি আমার মুক্তির মানচিত্র। এমন একজন মানুষ, যিনি অভুক্ত থেকেও দরিদ্রের জন্য রান্না করতেন, গানে গানে বিপ্লব করতেন, তিনি তো কেবল ‘জাতীয় কবি’ নন তিনি আমাদের হৃদয়ের এক চিরন্তন ঝংকার।

নজরুলকে ভালোবাসি কারণ তিনি শুধু লিখতেন না, বাঁচতেন। এবং কী অদ্ভুতভাবে বাঁচতেন!

শহীদ

×