
ছবি: জনকণ্ঠ
নববর্ষের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর চাটমোহর কার্যালয়ে দিনব্যাপী নানা উৎসব ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে বরণ করা হয় নতুন বছরকে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি জনাব ছাইফুল ইসলাম খান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ এনামুল হক এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন একে আজাদ। প্রধান বক্তা ছিলেন আব্দুল্লাহ আল আমিন চৌধুরী, জেনারেল ম্যানেজার, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, পাবনা।
ভাঙ্গুড়া অঞ্চলে পহেলা বৈশাখ বাঙালির জীবনে যুগ যুগ ধরে ঐতিহ্যবাহী উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এই দিনে পারিবারিক বন্ধন, হৃদয়ের উষ্ণতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে। উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল বৈশাখী খাবার।
বৈশাখী খাবারের বাহার পান্থা ভাত: বৈশাখী সকালের অন্যতম প্রধান খাবার পান্থা ভাত। এটি আগের রাতের ভাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে তৈরি করা হয়। সঙ্গে থাকে লবণ, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ, সরিষার তেল এবং পাটশাক ভাজি। লেবুর রস যোগ করলে স্বাদ হয় আরও প্রাণবন্ত।
ভর্তার বাহার: পহেলা বৈশাখের মেনুতে ছিল সিঁদল ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা, আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, ধোঁয়া মরিচ ভর্তা, ডালের ভর্তা ইত্যাদি।
সিঁদল: ছোট মাছের শুঁটকি ও কচুর ডাটা দিয়ে তৈরি বিশেষ এক মুখরোচক খাবার, যা মাগুর মাছ, বোয়াল কিংবা শাকের সঙ্গে রান্না করেও খাওয়া হয়।
লাবড়া ও শাকসবজি: লাউ, কুমড়ো, পটল, শিম, বেগুন, আলু ইত্যাদি দিয়ে তৈরি লাবড়া খিচুড়ির সঙ্গে পরিবেশিত হয়। এর হালকা মশলার স্বাদ ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
চিড়া-দই ও মুড়ি-মুড়কি: বৈশাখী সকালের সহজ পুষ্টিকর খাবার চিড়া-দই ও হালকা মুড়ি ছিল সবার পছন্দের। মুড়কি অর্থাৎ গুড় ও খইয়ের মিশ্রণ ছিল মিষ্টিমুখের অন্যতম আইটেম।
পিঠা ও মিষ্টান্ন: বাঙালির প্রিয় পিঠা যেমন পুলি, দুধপুলি, পাটিসাপটা ছাড়াও পরিবেশন করা হয় ভাপা পিঠা। এছাড়া রসগোল্লা, সন্দেশ, মিষ্টি দই—সবই ছিল বৈশাখী টেবিলে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, “বৈশাখ আসে-যায়, কিন্তু বাঙালির ঐতিহ্য থেকে যায়।” ব্যবসায়ীরা এই দিনেই নতুন হিসাব খাতা হালনাগাদ করেন এবং মিষ্টি বিতরণ করেন। এই বৈশাখী আয়োজন শুধু উৎসবই নয়, বাঙালির সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি।
শহীদ