
ছবি: সংগৃহীত
সাংগ্রাই শোভাযাত্রা ও জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে খাগড়াছড়িতে উদযাপিত হচ্ছে মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই উৎসব। বর্ণিল আয়োজনে উৎসবে মাতোয়ারা মারমা জনগোষ্টি।
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রাণের উৎসব বৈসাবিকে ঘিরে পুরো খাগড়াছড়ি জেলায় আনন্দের রং ছড়িয়ে পড়েছে। উৎসবের তৃতীয় দিনে আজ রবিবার(১৪ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইং উৎসব। মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাইং উৎসবকে ঘিরে খাগড়াছড়ি জেলা শহর নানা রং-এ রঙ্গিন হয়ে উঠেছে। এ উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল মারমা জনগোষ্ঠীর বর্ণাঢ্য সাংগ্রাইং র্যালি ও জলকেলি বা জলোৎসব।
সকালে বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ক্যং ফুল পূজার মধ্য দিয়ে সাংগ্রাই উৎসবের সূচনা হয়। সাংগ্রই উৎসব উপভোগ করতে খাগড়াছড়ি এসেছে বিপুল সংখ্যক পর্যটক। উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ে শান্তি সম্প্রীতির বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে আশা আয়োজকদের।
পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে খাগড়াছড়িতে মারমা সম্প্রদায়ের নববর্ষ বরণের উৎসব সাংগ্রাই শুরু হয়েছে। রবিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে জেলা সদরের পানখাইয়াপাড়া বটতলায় মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাইং উৎসবের উদ্বোধন করেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো: আমান হাসান।
মারমা উন্নয়ন সংসদ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে মারমা সম্প্রদায়ের এ উৎসবশুরু হয়। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও গান পরিবেশন করে মারমা শিল্পীরা। পুরাতন বছরের গ্লানি দুঃখ মুছে যাবে সাংগ্রাই মৈত্রীর জলে এমন বিশ্বাস থেকে পানি খেলায় মেতে উঠে মারমারা। এর পর শুরু হয় বর্নাঢ্য র্যালী। বর্ণিল সাজে হাজারো তরুন-তরুনীর র্যালীটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন করে।
এসময় তরুণ তরুণী, যুবক ও যুবতীরা সামনের দিনগুলোতে অনাবিল সুখ আর শান্তি কামনায় পানি খেলায় অংশ নেয় ।উৎসবে বাঁধভাঙা মাতোয়ারা মারমা তরুণ-তরুণীরা।
অনুষ্ঠানে, খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার, পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েলসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈসাবি উৎসবের মাধ্যমে পাহাড়ে সহাবস্থান নিশ্চিত হবে বলে প্রত্যাশা করেন সেনাবাহিনীর খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো: আমান হাসান।
এ সময় মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা জলোৎসবে তরুন-তরুনীরা একে অপরের দিকে পানি নিক্ষেপ করে উল্লাস প্রকাশ করে। মারমা জনগোষ্ঠীর বিশ্বাস এই পানি উৎসবের মধ্য দিয়ে অতীতের সকল গ্লানি দুঃখ ও পাপ ধুয়ে-মুছে যাবে। সে সাথে তরুন-তরুনীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে বেছে নেবে তাদের জীবন সঙ্গীকে। এছাড়াও উৎসব উপলক্ষে নানা খেলা-ধুলা, পিঠা উৎসব, মারমাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও ওপেন কনসার্টের আয়োজন করা হয়।
বৈসাবি উৎসব উপভোগ করতে এ বছর খাগড়াছড়ি এসেছে দেশি-বিদেশি বিপুল সংখ্যক পর্যটক। তারা এ উৎসব দেখে অভিভূত।
বৈসাবী এক সময় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য হলেও এখন সার্বজনীন ও জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আরো সুদৃঢ় হোক এ প্রত্যাশা জনপ্রতিনিধিসহ সকলের।
মায়মুনা