ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২

ইতিহাসে প্রথমবার মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারেনি আওয়ামীপন্থীরা

প্রকাশিত: ০০:৫১, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

ইতিহাসে প্রথমবার মনোনয়ন সংগ্রহ করতে পারেনি আওয়ামীপন্থীরা

ছবি: সংগৃহীত

শত বছরের গৌরবময় ঐতিহ্যের অধিকারী চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিতে প্রথমবারের মতো মনোনয়ন সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা। জাতীয় রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকলেও, এ সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। এমনকি স্বৈরাচার শাসনামলেও এখানে গণতান্ত্রিক চর্চা বজায় ছিল, বিরোধীরাও নির্বাচিত হয়েছেন ভোটের মাধ্যমে।

তবে ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে যায়। সেদিন আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামীপন্থী অর্ধশতাধিক আইনজীবীকে আসামি করা হয়। এর পর থেকেই তারা আদালতে কোণঠাসা হয়ে পড়েন, যার ছাপ পড়ে আসন্ন নির্বাচনে।

গত বৃহস্পতিবার ছিল চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শেষ দিন। ২১টি পদের মধ্যে ১৪টিতে বিএনপি-ঘনিষ্ঠ এবং ৭টিতে জামায়াতপন্থী আইনজীবীরা এককভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে আওয়ামীপন্থী কিংবা বামপন্থী কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিতে পারেননি। ফলে ভোট গ্রহণ না করেই ২১টি পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, দেশের অন্যতম শিক্ষিত ও পেশাদার সম্প্রদায় যখন এভাবে রাজনীতির অভিঘাতে বিভক্ত হয়, তখন জাতীয় রাজনীতির ভবিষ্যৎ কোন পথে এগোবে?

নবনির্বাচিতদের দাবি, ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার উপর হামলা ও আইনজীবী আলিফ হত্যার পর আওয়ামীপন্থীরা নৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। তারা আর মাঠে নামার মত মনোবল কিংবা সাহস খুঁজে পাচ্ছে না। স্থানীয়, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও আত্মগোপনে থাকায় সংগঠনটি কার্যত নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে।

অন্যদিকে, আওয়ামীপন্থী অংশ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, তাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে এ অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। কমিশনের একজন প্রতিনিধি জানান, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহে কোনো বাধা ছিল না, বরং পূর্বঘোষিত সময় অনুযায়ী ১০ তারিখ দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কমিশনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অবস্থান করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুধু ২১ জন প্রার্থীই মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন।

উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারিতে পূর্ববর্তী কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নির্বাচন কমিটির পদত্যাগের কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়। এবারের নির্বাচনে ১৬ এপ্রিল ভোটগ্রহণের তারিখ থাকলেও প্রার্থীদের সবাই একক হওয়ায় কোনো ভোটগ্রহণ হচ্ছে না।

সাধারণ আইনজীবীরা চান, আগামীতে যেন প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হয়, যেখানে ভোটের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নির্বাচিত করার সুযোগ থাকে।

ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/AWbx70-PF9I?si=IfT5B_8iSc30gbWV

এম.কে.

×