
রিফাদ রাব্বি, বয়স ১৫ বছর। জীবিকার তাগিদে মুন্সিগঞ্জের থেকে পটুয়াখালীর বাউফলে এসেছেন। একটি প্লাস্টিকের পাইপের সাথে হরেক রংঙ্গের বাহারি বেলুন। তাও আবার বেলুনের ভিতরে বেলুন। সারাদিন ঘুরে ঘুরে এই বেলুন বিক্রি করেন, শহর থেকে গ্রামগঞ্জে।
রাব্বিার সাথে তার এলাকার আরও ৮জন নানা বয়সী মানুষ আছেন। তারাও বেলুন বিক্রি করতে এখানে এসেছেন। শহরের কাছে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে তারা থাকেন। তাদের রান্নাবান্না করে খাওনোর জন্য আলাদা একজন লোক আছে। তাকে মাসিক ৮ হাজার টাকার বেতনে সাথে নিয়ে আসা হয়েছে।
সকালের নাস্তা শেষ করে বিভিন্ন বিভিন্ন ভাবে যেযারমত করে চলে যান বেলুন বিক্রির উদ্দেশ্যে। শহর থেকে গ্রামের হাটবাজারে। রাতে দেখা হয় তাদের। কিছু সময় গল্পগুজব করেন। এরপর খাবার শেষে ঘুমিয়ে পরেন। সারাদিনের হেঁটে চলার ক্লান্তি নিমিশেই তাদের দুই চোখে ঘুম এনে দেয়।
রাব্বি জানায়, বাউফলে এসে তারা ১২দিন হয়। পুরো বৈশাখ মাস জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় মেলা বসবে আর সেই মেলায় তারা রঙ্গিন বেলুন বিক্রি করবেন। বেলুনগুলো মূলত শিশুদের আকর্ষন করে এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে।
একটি বেলুনের দাম রাখা হয়েছে ৮০ থেতে ১শ২০ টাকা। কাচেরমত স্বচ্ছ আবরণের মধ্যে রঙ্গিন বেলুনটির দাম ৮০ টাকা। আর বেলুনের সাথে ইলেকট্রিক বাতি লাগানোটার দাম ১শ২০টাকা। তারে মোড়ানো ছোট ছোট বাতিগুলো মূলত ছোট ছোট ৪টি ব্যাটারি দিয়ে জ্বালানো হয়। সাথে দেয়া আছে বাতি অফ অনের সুইজ।
এক প্রশ্নের জবাবে রাব্বি জানায়, তিনি পড়াশুনাও করেন। মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ইউনিয়নের একটি হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়েন। ৬মাস স্কুলে যান। আর বাকি ৬মাস জীবিকার তাগিতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। বাবা-মা ও ভাই-বোনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন। তবে রাব্বির কাছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন না থাকায় কথা বলেই শন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। তবে স্বজনদের একান্ত দেখতে ইচ্ছে করলে সাথে থাকা অন্য ব্যক্তিদের অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও কলে কথা বলেন।
রাব্বি প্রতিদিন ১০-১৫টি রঙ্গিন বেলুন বিক্রি করেন। ১হাজার২শ টাকা, কোন দিন তার চেয়ে বেশি টাকায় বেলুন বিক্রি করেন। প্রতিদিনের খরচ বাদ দিয়ে তার কাছে ১হাজার টাকার কমবেশি থাকে। সপ্তাহে একদিন বাড়িতে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠান। নিজের কাছে কোন টাকা জমা রাখেননা।
রাজু