
রাজশাহী বিভাগীয় হিসাব ভবনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষীরা। শনিবার রাজশাহী প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত পাঁচ কারারক্ষী উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে নগরের লক্ষ্মীপুর এলাকার বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত কারারক্ষী রবিউল ইসলাম লেবু লিখিত বক্তব্যে বলেন, ১৯৯৬ সালের ২৫ মে তিনি কারারক্ষী পদে যোগদান করেন। ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পরও পদোন্নতি না পাওয়ায় ২০২১ সালের ১ আগস্ট স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। এরপর অবসরোত্তর ছুটি ভোগ শেষে পেনশনসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দিয়ে হয়রানির শিকার হন।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘বিভাগীয় হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অডিটর ওহেদুজ্জামান তার সার্ভিস বই ও ইনক্রিমেন্ট সংক্রান্ত কাগজ দেখে জানান, ২০১১ সালে তিনি নাকি একটি ইনক্রিমেন্ট অতিরিক্ত পেয়েছেন, যা তিনি প্রাপ্য ছিলেন না। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করলে অডিটর তাকে হয়রানি করতে শুরু করেন এবং পেনশন বিলম্বিত করার হুমকি দেন।
২০২২ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অডিটরের বানানো একটি ফিক্সিশন নোটে স্বাক্ষর নিতে বাধ্য করা হয়। এরপর ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর রবিউল ইসলামের নামে ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৪ টাকার একটি চেক ইস্যু করা হয়, যা তিনি অগ্রণী ব্যাংকের নিজ হিসাবে জমা করেন।
রবিউল ইসলাম বলেন, অবসরোত্তর ছুটিকালীন নিয়মিত ইনক্রিমেন্টও প্রদান করা হয়নি। তার মূল বেতন ২১ হাজার ৩১০ টাকা নির্ধারণ করে মোট ২২ লাখ ৫ হাজার ৫৮৫ টাকার মধ্যে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৮০০ টাকা কেটে রাখা হয়। ফলে তার মাসিক পেনশন ১০ হাজার ৭০ টাকার বদলে ৯ হাজার ৫৮৯ টাকা নির্ধারিত হয়, যা তিনি এখনো গ্রহণ করছেন।
তিনি আরও দাবি করেন, হিসাব অফিসের কর্মকর্তাদের কারণে তিনি এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৮২ হাজার ৪১ টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। দেশের অন্য কোনো জেলায় পেনশন থেকে এমনভাবে টাকা কেটে রাখার নজির নেই বলেও অভিযোগ করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে নগরীর হেতমখাঁ এলাকার বাসিন্দা ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান কারারক্ষী সৌহিদুল ইসলাম, ভদ্রা এলাকার বাসিন্দা কারারক্ষী মালোয়ার হোসেন, নিউমার্কেট এলাকার বাসিন্দা কারারক্ষী জহুরুল ইসলাম ও কাটাখালী এলাকার বাসিন্দা কারারক্ষী জাহির আলী উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিভাগীয় হিসাব ভবনের নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।