
ছবি: জনকণ্ঠ
রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের ফটিক জলে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ।
শনিবার ভোরে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে নদীতে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে ওই জনগোষ্ঠীর আবালবৃদ্ধবনিতা শুরু করেছে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বিজু সাধারণত তিন দিনব্যাপী হয়ে থাকে। চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিনকে বলে ফুল বিজু, চৈত্র সংক্রান্তির দিনকে বলে মূল বিজু, আর পরের দিনটিকে বলা হয় গজ্যাপজ্যা। ফুল বিজু উপলক্ষে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের তীরে পাহাড়ি নারী, পুরুষ ও শিশুরা বাহারি রঙের ঐতিহ্যবাহী পিনন-হাদি ও ধুতি-পাঞ্জাবি পরে হ্রদে ফুল ভাসিয়ে ফুল নিবেদন করেন।
ওই দিন আনুষ্ঠানিকভাবে রাঙামাটির রাজবন বিহারের পূর্ব ঘাটে সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সকল বয়সের পাহাড়ি নারী-পুরুষেরা ফুল নিবেদন করেন। একই সঙ্গে শহরের গর্জনতলী, কেরানিপাহাড়, আসামবস্তিসহ জেলার দশ উপজেলার পাহাড়ি পল্লীর চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা এবং তঞ্চঙ্গ্যা জাতিগোষ্ঠীর মানুষও হ্রদ, নদী ও ঝিরির স্বচ্ছ পানিতে গঙ্গাদেবীর উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদন করেন।
স্থানীয়দের বিশ্বাস, পুরোনো বছরের সব দুঃখ, কষ্ট ও গ্লানি দূর করে নতুন বছর যেন সুখ-শান্তিতে ভরে ওঠে—এই আশায় তারা এই ভাসনে অংশ নেন।
রেনু বালা চাকমা বলেন, ‘বিজু আমাদের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান ঐতিহ্যবাহী উৎসব। আজ হচ্ছে বিজুর প্রথম দিন—ফুল বিজু। এই দিনে আমরা পানিতে ফুল নিবেদন করে মা গঙ্গাদেবীর কাছে প্রার্থনা করি, যেন পুরোনো বছরের দুঃখ, কষ্ট ও গ্লানি দূর হয়ে নতুন বছরটি সুখে কাটে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, ‘বিজু মানে চেতনা, বিজু মানে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। পুরোনো বছরের গ্লানি ও দুঃখ পেছনে ফেলে নতুন বছরের আশায় আমরা এগিয়ে যেতে চাই। এই পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ যেন নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি নিয়ে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে—এটাই আমাদের কামনা। সকলে মিলে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে পারি।’
শহীদ