ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ১৫:১৫, ১২ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৫:৩৭, ১২ এপ্রিল ২০২৫

নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা

ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে যুবলীগের এক নেতাকে। নিহত নেতার পরিবারের দাবি, প্রায় চার ঘণ্টা ধরে ধাপে ধাপে তাকে লোহার পাইপ দিয়ে মারধর করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহতের নাম আব্দুল কাদের মিলন (৩৫)। তিনি নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আমিন মাঝি বাড়ির মো. ইসমাইলের ছেলে।

পরিবারের সদস্যদের ভাষ্যমতে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে মিলন তার অসুস্থ শ্যালককে দেখতে দাগনভূঞায় যান। ফেরার পথে চৌধুরীহাট বাজার এলাকায় কয়েকটি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তাদের ধাওয়া করে এবং চরপাবর্তী ইউনিয়নের হাফেজ আব্দুর রহীম এতিমখানার সামনে তাকে ধরে ফেলে। পরে দীর্ঘ সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে তাকে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়।

মিলনের ছোট ভাই আব্দুর রহীম রাকিব জানান, “আমার ভাইকে ২-৩টি মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তরা তুলে নিয়ে যায় এবং এতিমখানার সামনে লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। খবর পেয়ে মামা শ্বশুর মাইন উদ্দিন ঘটনাস্থলে ছুটে গেলেও হামলাকারীদের সামনে পড়লে তিনিও পালিয়ে যান।”

পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও তারা মিলনকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। পরদিন সকালে ঢাকায় নেওয়ার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় তিনি মারা যান।

নিহতের স্ত্রী বিবি জুলেখা বলেন, “মৃত্যুর আগে মিলন হামলাকারীদের মধ্যে ২০-২৫ জনের নাম বলেন, যারা বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।”

তবে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন দাবি করেছেন, “এই হামলার সঙ্গে বিএনপির কেউ জড়িত নয়। মিলনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাস ও মাদকের অভিযোগ রয়েছে। জনগণের ক্ষোভ থেকেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে।”

একইভাবে, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, “আমাদের কেউ জড়িত নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।”

কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, “শুক্রবার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। মরদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং দোষীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফারুক

×