
ছবি: সংগৃহীত
রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদ পাল্টে দিয়েছে নড়াইলের কৃষি ব্যবস্থা। এই পদ্ধতিতে আবাদ করে দুই ফসলি জমি রূপান্তরিত হচ্ছে তিন ফসলি জমিতে। শুধুমাত্র রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষে কৃষকের ঘরে আসবে অন্তত ৪ কোটি টাকা।
জমিতে বাড়তি ফসল উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় সরিষা আবাদে ঝুঁকছে এ জনপদের চাষীরা। আর প্রতি বছরই বাড়ছে সরিষার আবাদ। এ খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।
প্রায় আট লক্ষ মানুষের বসবাসের জেলা নড়াইল। বিল ও ঘের বেষ্টিত এ জনপদের মানুষের প্রধান জীবিকার উৎস কৃষি কাজ ও মৎস্য চাষ। কৃষি প্রধান এ জেলার ৮২ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের উপর নির্ভরশীল। ধান, পাট, গমসহ বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি এ জেলার অন্তত ১৫ হাজার কৃষক সরিষা চাষের সাথে জড়িত।
জেলার হাজারো কৃষক এবছর নিজ নিজ জমিতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষার আবাদ করেছেন। কড়লা, ইছামতি, পাটেশ্বরী বিলসহ ১৭ টি বিলের অন্তত ১৫ হাজার কৃষক রিলে পদ্ধতিতে সরিষা আবাদ করে লাভবান হচ্ছে।
রিলে পদ্ধতি হচ্ছে আমন ধান কাটার ১৫-২০ দিন পূর্বে পাকা ধানের মধ্যে সরিষার বীজ ছিটিয়ে (বপন করে) চাষ শুরু করে, জমিতে যখন সরিষার চারা গজিয়ে যায় তখন আমন ধান কেটে ফেলে কৃষক। সরিষার বীজ বপনের তিন মাসের মধ্যে জমি চাষ ও সেচ ছাড়া কম খরচে জমি থেকে সরিষা কর্তন করে কৃষকেরা। জমি থেকে সরিষা কেটে সেই জমিতে পাটের আবাদ করে তারা। এই পদ্ধতিতে চাষ করায় দুই ফসলি জমি পরিনত হয়েছে তিন ফসলিতে। এতে লাভবান হচ্ছে প্রান্তিক চাষীরা।
চলতি মৌসুমে জেলায় ১৩,৩৫০ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত সরিষা থেকে উৎপাদন হবে ১৭,৯৯৩ মে: ট: সরিষা যার বাজার মূল্য অন্তত ১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে রিলে পদ্ধতিতে চাষ হওয়া ৬,৬২৫ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হবে ৮,৯২৮ মে: ট: সরিষা। রিলে পদ্ধতিতে চাষে কৃষকের ঘরে আসবে অন্তত: ৪ কোটি টাকা।
রিলে পদ্ধতিতে সরিষা উৎপাদনে নীচু এলাকায় কৃষির ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।বিনা চাষে সরিষার আবাদ করায় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছে।
নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবীদ মো: মো.জসীম উদ্দীন জানান, এ বছর লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশি জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উন্নত জাতের সরিষা আবাদ করায় লাভবান হচ্ছে কৃষকেরা। গত মৌসুমে জেলায় সরিষার উৎপাদন হয়েছিল ১৫ হাজার ৬শত ৪৮ মে: ট:, যার বাজার মূল্য ছিল দশ কোটি টাকা। চলতি বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার ৯ শত ৯৩ মে: ট: যার বাজার মূল্য অন্তত ১২ কোটি টাকা।
মায়মুনা