ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

বাম্পার ফলনের আশা

রাজশাহীতে চৈত্র শেষের বৃষ্টিতে সতেজ গুটি আম

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী

প্রকাশিত: ০০:০৩, ১২ এপ্রিল ২০২৫

রাজশাহীতে চৈত্র শেষের বৃষ্টিতে সতেজ গুটি আম

.

চৈত্র শেষের বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে রাজশাহী অঞ্চলের আমের গুটি। বৃহস্পতিবার রাতের বৃষ্টির পর সতেজ হয়ে উঠেছে এ অঞ্চলের গাছে গাছে আমের গুটি। আমচাষি ও কৃষি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃহস্পতিবারের বৃষ্টি এ অঞ্চলের আমের জন্য দারুণ ‘টনিক’ হিসেবে কাজ করেছে। এখন আমের গুটি আর ঝরে পড়ার শঙ্কা নেই। বড় ধরনের  প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে  এবার রাজশাহী অঞ্চলে আমের বাম্পার ফলন আশা করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আগের দুই বছর এ অঞ্চলে আমের ফলনে বিপর্যয় হয়েছে। এবার মুকুলের সময় আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। আর তীব্র খরার পর চৈত্র শেষের বৃষ্টি হওয়ায় পর নতুন আশায় বুক বাঁধছেন চাষি। তারা বলছেন, বৃষ্টি হওয়ায় গুটি ঝরা কমবে।
রাজশাহী কৃষি  বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এতে ২ লাখ ৬০ হাজার টন উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। গত বছর প্রায় একই পরিমাণ বাগান থাকলেও অনুকূল আবহাওয়া না থাকায় ফলন বিপর্যয় হয়। ২০২৩ সালে দীর্ঘ সময় শীত থাকায় মুকুল ঠিকমতো বের হয়নি। গত বছর মুকুল বের হওয়ার সময় বৃষ্টিপাত হওয়ায় নতুন পাতা গোজায়। এতে কিছু আগাম মুকুল গাছে থাকায় সেগুলো পচে শুকিয়ে যায়। তবে এবার শুরু থেকেই আমচাষের উপযোগী আবহাওয়া বিরাজ করছে।
রাজশাহীর পবার আমচাষি দুলাল আবদুল্লাহ জানান, কদিন আগেও গুটি ঝরে পড়ছিল গাছ থেকে। এতে হতাশ ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবারের বৃষ্টির পর সেই হতাশা কেটে গেছে। তিনি বলেন, খরায়  গাছের গোড়ায় সেচ দিতে হয়। এতে বাড়তি টাকা খরচ হতো। এবার সেই খরচ আর লাগল না। বৃহস্পতিবার বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে। এতে
সেচের খরচ বেঁচে গেছে। গুটি ঝরাও বন্ধ হয়ে গেছে। এবার ফলনের জন্য ভালো পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
চাষিরা বলছেন, এবার মুকুল বের হওয়ার সময় ঘন কুয়াশা বা বৃষ্টি হয়নি। গড়ে ৭৮ থেকে ৮০ শতাংশ গাছে এসেছে মুকুল। ফুল ফুটে গুটি মোটরদানা হতেই মিলেছে কাক্সিক্ষত বৃষ্টি। আর গুটি বেড়ে ওঠার সময় সর্বশেষ হলো বৃষ্টিপাত। এখন আর গুটিঝরা রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা নেই। চারঘাটের আমচাষি মিজানুর রহমান বলেন, রাজশাহীতে এখন আমের জন্য উপযোগী আবহাওয়া বিরাজ করছে।  
রাজশাহী কৃষি বিভাগ বলছে, এবার ফল ধারণের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে। গাছে ভালো গুটি এসেছে। এ গুটি টিকিয়ে রাখতে দ্রুত ছত্রাকনাশক ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। বৃষ্টির কারণে এখন মাটির রস আছে।
শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে জানিয়ে রাজশাহী ফল গবেষণাগারের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, গাছের আমের গুটি এখন বেড়ে উঠছে। এখনই নির্ধারিত মাত্রায় কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। আমগাছের পরিচর্যা করতে হবে।

×