
অল্প বয়সে হালিমা বেগমের বিয়ে হয়। এখন বয়স প্রায় ষাট বছর। ২০ বছর আগে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম স্বামী হান্নান মিয়া মারা যায় রেল দুর্ঘটনায়। নাবালক দুই ছেলে ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। কোনো উপায় না দেখে সংসার চালানোর জন্য ২০০৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলজংশন স্টেশনে ভাসমান দোকানে ভাত বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে ভাত বিক্রি করেই চলছে তার সংসার। আখাউড়া পৌরসভার মালদারপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
শনিবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে তার সঙ্গে কথা বলার সময় জানায়, পরিবারের বোঝা খালি করার জন্য তাকে বিয়ে দিয়েছিল সহায় সম্বলহীন এক বয়স্ক লোকের কাছে। সে নিয়মিত কাজেও যেতে পারেনি। খেয়ে না খেয়ে দিন চলছিল তাদের। এর মধ্যে ৫টি সন্তান সংসারে চলে আসে। এর মধ্যে দুইটি মারা যায়। ২০ বছর আগে হঠাৎ একদিন মারা গেল স্বামী হান্নান মিয়া। স্বামী মারা যাওয়ার পর নাবালক তিন সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে হালিমা বেগম। সন্তানদের বাঁচাতে কাজের খুজে নেমে পড়েন কিন্তু সংসার চালানোর মত কাজ তার কপালে জুটেনি।
পরে একজনের পরামর্শে আখাউড়া জংশন স্টেশনে ভাসমান ভাতের দোকান খোলেন। সেই থেকে তিনি ভাত বিক্রি করছেন। তিনি জানান, তার এখানে ভাত খেতে আসেন স্টেশনের বিভিন্ন ট্রেনে যাতায়াতকারী ভাসমান হতদরিদ্র মানুষ গুলো। আগের মত কাষ্টমার নেই। আগে যেখানে ৮ থেকে ১০ কেজি চালের ভাত বিক্রি করা যেত, এখন ৩ কেজি বিক্রি করা যায়। বর্তমানে তার দোকানে মাছ ভাত ৫০ টাকা, ডিম ভাত ৪০ টাকা ও সবজি ভাত ৩০ টাকায় বিক্রি করেন।
আগের মত পরিশ্রম করতে পারেন না তিনি। আগে আরো কমদামে ভাত বিক্রি করেও সংসার চালানো যেত কিন্তু বর্তমানে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় এই ব্যবসায় তার সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। ছেলে দুইটা রিক্সা চলায়, থাকে আলাদা। মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত কিন্তু বিয়ে দিতে পারছেন না। সারাদিনে ৫০০ টাকাও আয় করতে পারছেন না তিনি। তার হতদরিদ্র সংসারে সরকারী সহায়তাও মিলছেনা। তিনি সরকারের কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
রাজু