
পত্নীতলা উপজেলার বরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের খেসারত দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের। অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন নিয়ে আব্দুর রউফ ও গৌর চন্দ্র মাহাতো নামে দুই শিক্ষকের মধ্যে শুরু হয়েছে টানা-হেঁচড়া। এতে দুই দলে বিভক্ত হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীরা। আর এতেই খেসারত দিচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের গেটে তালা। উৎসুক এলাকাবাসীর ভিড়। তারা জানালেন, এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন ২০২০ সালের দিকে অবসরে যাওয়ার পর জ্যৈষ্ঠতার ভিত্তিতে শিক্ষক গৌর চন্দ্র মাহাতো ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন শুরু করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ আমলে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শ্যামল দত্তের যোগসাজশে টাকার বিনিময়ে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে আব্দুর রউফকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে মামলা করে বসেন শিক্ষক গৌর। এদিকে ৫ আগস্টের পর আব্দুর রউফ পদত্যাগ করলে গৌর চন্দ্র মাহাতোকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করার সম্মতি প্রদান করেন। ভালোই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। পরবর্তীতে সরকারি এক আদেশের প্রেক্ষিতে আবার প্রধান শিক্ষক হিসেবে দাবি করে বসেন রউফ। শুরু হয় উত্তেজনা। এমনকি হাতাহাতির মতো ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান তারা। রেজাউল করিম, খাদেমুল ইসলাম সাইদুর রহমান, মেহেদী হাসান, ইসমাইল হোসেনসহ অনেকে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি শিক্ষকরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
পত্নীতলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম জিল্লুর রহমান বলেন, বিধি মোতাবেক রউফকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক গৌর সেটা মেনে নেয়নি। তাই মামলা করেছে। এদিকে পট পরিবর্তনের পর ছাত্র-শিক্ষক এলাকাবাসীসহ সকলের সম্মতিক্রমে গৌরকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রত্যয়ন দেওয়া হয়েছে। এখন উভয় পক্ষই জটিলতা সৃষ্টি করছে। পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বরইল উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আলীমুজ্জামান মিলন বলেন, উভয়পক্ষকে নিয়ে একটা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। তবে যেকোনো উপায়ে স্কুল খোলা থাকবে এবং পাঠদান চলবে।