
৩৬ বিদেশী বিনিয়োগকারীর পরিদর্শন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পাঁচরুখিতে অবস্থিত জাপান স্পেশাল ইকোনমিক জোন পরিদর্শন করেছেন বিভিন্ন দেশের ৩৬ বিদেশী বিনিয়োগকারীরা। মঙ্গলবার দুপুরে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা অর্থনৈতিক অঞ্চলটিতে বিনিয়োগ করার কর্মপরিবেশ, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও অবকাঠমোসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার বিষয় সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।
এদিকে পরিদর্শনের এসে সুইডিশ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান নিলোরন বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম এবং জাপান ইকোনোমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টারোকাওয়াচি (ঃধৎড় শধধিপযর) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। সুইডিশ এই বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান জাপান ইকোনমিক জোনে ১০ হাজার স্কায়ার মিটার জায়গার ওপর তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান (কারখানা) নির্মাণ করবে। এর মাধ্যমে দেশে সুইডিশ বিনিয়োগের সুচনা হলো।
প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন- চায়নার ১০ জন, ইউএসএর ৮ জন, জাপানের ৩ জন, সৌদি আরবের ৩ জন, আরব আমিরাতের ৩ জন এবং প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ী একজনসহ মোট ৩৬ জন ব্যবসায়ী। শুরুতেই বিনিয়োগকারীদের সামনে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড (বিএসইজেড) কর্তৃপক্ষ বিনিয়োগের বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা তুলে ধরেন।
এরপর তারা বিনিয়োগ পরিবেশ, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো বিষয়ক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। খতিয়ে দেখছেন সুযোগ-সুবিধা ও কর্মপরিবেশ। জাপানিজ ইকোনোমিক জোনের প্রকল্প পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন জানান, চার দিনব্যাপী শুরু হওয়া বিনিয়োগ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করছেন বিদেশী বিনিয়োগকারীরা। অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনোয়োগ করার ক্ষেত্রে কি কি সুবিধা এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে সে বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী দেশের পলিসির ওপর নির্ভর করে সব ধরনের সুযোগ সুবিধা দেওয়া হবে। আমার আশাবাদী এ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রত্যাশা অনুযায়ী বিনিয়োগ পাওয়া যাবে। পরিবহন ও জ্বালানি বিষয়েও কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও আলোচনা করবেন বিদেশী উদ্যোক্তারা। বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও জুলাই বিপ্লব পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কার তুলে ধরতে বাংলাদেশ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডা আয়োজিত বিনিয়োগ সম্মেলনের অংশ হিসেবে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পরিদর্শন করানো হচ্ছে।
বিকোর এমডি মো. ফায়রোজ বাংলাদেশে বিনিয়োগের নানা সুযোগ সুবিধার কথা তুলে ধরে বলেন, আমার আমাদের বিনিয়োগের চাহিদা অনুয়ায়ী সুযোগ সুবিধা বিডা থেকে পাচ্ছি। আমরা আরও বিনিয়োগ করতে চাই। বিনিয়োগ করার মতো পরিবেশ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার গণমাধ্যমে জানান,জাপান ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করবে এমন এরই মধ্যে ৮টি কোম্পানি এখানে চুক্তি করেছে।
পাইপ লাইনে আছে আরও ২০টি। জাপান ইকোনমিক জোনের ৬০০ একর জমি শিল্পকারখানা নির্মাণ করার জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। আরও ৪০০ একর জমি শিল্পায়নের জন্য উপযুক্ত করার কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, কয়েক মিলিয়ন ডালার বিনিয়োগ ইতোমধ্যে এসেছে। আরও আসবে আমরা আশা করছি। জাপান ইকোনোমিক জোন পুরো চালু হলে এখানেই ১ লাখ লোকের কর্মসংস্থা হবে আশা করছি।
বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে টানতে সরকার নানা ধরনের পলিসি তৈরি করছে। আবার কিছু পলিসির সংশোধন করা হচ্ছে। এ দিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট।