ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সালাহউদ্দিন

ফিলিস্তিনের পক্ষে বড় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৬, ৯ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের পক্ষে বড় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে বিএনপি

গাজা ও রাফায় ইসরাইলের বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ঢাবি রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে ছাত্রদল

ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে বড় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি। শীঘ্রই কেন্দ্রীয়ভাবে এবং সারাদেশে ইসরাইলের আগ্রাসী বর্বরতার বিরুদ্ধে বৃহৎ কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা জানান।
এ সময় তিনি বলেন, ‘ইসরাইলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা দেখা গেছে।’ এছাড়া ফিলিস্তিনের গাজায় বর্বর গণহত্যায় ইন্দো-মার্কিন বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মদত দিচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। 
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা ইসরাইলের সব পণ্য বর্জন করব, তার মানে এ না আমরা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা করব। সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে কিছু প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে। এখানে সরকারের ব্যর্থতা লক্ষণীয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা লক্ষণীয়। তাদের উচিত ছিল, আগে থেকে এখানে সতর্কতা অবলম্বন করা। তাহলে বাংলাদেশকে আজকে এ বদনাম নিতে হতো না।  
সালাহউদ্দিন বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইন্দো-মার্কিন ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মধ্যে আশ্রিত এই ইসরাইলিরা আজ আপন দেশেই ফিলিস্তিনিদের পরবাসী বানাচ্ছে। অথচ এই গণহত্যার বিরুদ্ধে আজ সারাবিশ্ব, বিশ্বের সকল পরাশক্তি নির্বিকার।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে মুসলিম মোড়লদের আমরা আহ্বান জানাই- আপনারা সারা পৃথিবীতে নির্যাতিত মুসলিমদের পক্ষে আপনাদের কণ্ঠ উচ্চ করবেন এবং আপনারা ব্যবস্থা নেবেন। ইসরাইলকে যারা অস্ত্র সহযোগিতা করছে, তাদের আপনারা বাধ্য করুন ইসরাইলকে যেন কোনো মারণাস্ত্র না দেওয়া হয়। বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত এই এলাকায় যেন আর কোনো গণহত্যা চালানো না হয়।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার পরোক্ষভাবে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তারা বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘ইসরাইল ব্যতীত সকল রাষ্ট্রে গমনের’ কথাটি সরিয়ে দিয়েছিল। অথচ তারা বাংলাদেশের মুসলমানদের জন্য মায়াকান্নাও করেছিল। তারা আড়িপাতার যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সব গণতান্ত্রিক দলের বিরুদ্ধে যে নির্যাতনের সূচনা করেছিল, সেই যন্ত্র পেগাসাস ইসরাইল থেকে কিনেছিল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল ইসরাইলি পণ্য বয়কটের ডাক দেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের গণহত্যা দেখেও যেসব রাষ্ট্র নির্বিকারভাবে দাঁড়িয়ে আছেন, তাদের ধিক্কার জানাই। ফিলিস্তিনে মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন হওয়ার পরও অনেক মানবাধিকার সংগঠন কিছুই করছে না। যেখানে ইসরাইলের পণ্য থাকবে, সেখানেই বয়কট করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ইসরাইলের নৃশংসতাকে ব্যাখ্যা করা যায়, এমন কোনো শব্দ নেই। ২০২৩ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত তারা ৫১ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। এর বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের ছাত্রজনতা ইতোমধ্যে রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে রাজপথে শামিল হয়েছে।
ফিলিস্তিনের গাজা ও রাফায় বর্বরোচিত গণহত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদল এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া।
সমাবেশে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা ফিলিস্তিন ও বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান। অনেকেই হাতে এবং গালে ফিলিস্তিনের পতাকা আঁকেন। ফিলিস্তিনের গণহত্যা বন্ধ এবং ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান লেখা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে আসেন তারা।

আরো পড়ুন  

×