
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি
৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা সরকারি কর্মকমিশনকে (পিএসসি) তিনদিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন কমিশন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করবেন তারা।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে পিএসসির চেয়ারম্যানসহ কমিশনের সদস্যদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে পিএসসির সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে আন্দোলনকারীরা এ ঘোষণা দেন। আন্দোলনকারীদের পক্ষে ডা. ইমতিয়াজ আহমেদ এ ঘোষণা দেন। এরপর তারা পিএসসি ছেড়ে চলে যান।
এ সময় পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম সাংবাদিকদের বলেন, পরীক্ষা পেছানোর দাবিটা মনে হয় না যৌক্তিক। তিনি বলেন, যারা পড়াশোনা করেছে, তারা সবাই তৈরি। তারা অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে। আমি মনে করি তারা দুই সপ্তাহ পরীক্ষা পেছানোর জন্য বসে নেই। একই সিলেবাসে দুইটি পরীক্ষা। একটা সিলেবাস পড়ে পরীক্ষা দেওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষা পেছানোর দাবিটা মনে হয় না যৌক্তিক।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী রাজধানীর আগারগাঁওয়ে কমিশন ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন একদল চাকরিপ্রার্থী। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ শুরুর পরপরই সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পিএসসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোবাশ্বের মোনেম। তিনি ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, যারা পড়াশোনা করেছে, তারা সবাই তৈরি। তারা অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছে। আমি মনে করি তারা দুই সপ্তাহ পরীক্ষা পেছানোর জন্য বসে নেই। একই সিলেবাসে দুইটি পরীক্ষা। একটা সিলেবাস পড়ে পরীক্ষা দেওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পরীক্ষা পেছানোর দাবিটা মনে হয় না যৌক্তিক।
তার সেই মন্তব্য গণমাধ্যমে দেখার পর প্রার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে পুলিশের ব্যারিকেড পার হয়ে পিএসসির ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। পরে পিএসসি কর্মকর্তারা তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান বলে জানান। তবে আড়াই ঘণ্টার বৈঠকেও কোনো সমাধান আসেনি।
আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছে পিএসসি তিনদিন সময় চেয়েছে। আমরা সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রাখতে চাই। সেনাবাহিনীর ওপর আস্থা রেখে আমাদের আজকের কর্মসূচি আপাতত স্থগিত ঘোষণা করছি। তবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন পিএসসির সামনে অবস্থান করব।
চাকরিপ্রার্থীরা জানান, ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয় ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর। ছয় মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও এখনো অর্ধেক প্রার্থীর ভাইভা শেষ হয়নি। যে গতিতে পিএসসি এগোচ্ছে, তাতে আরও এক বছর সময় লাগবে ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা শেষ করতে।
এদিকে, এর মধ্যে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা রয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রার্থী ৪৬তম বিসিএসের লিখিত দেবেন। তারা মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন, না কি লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবেন- তা নিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন।
৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা ২২ এপ্রিল থেকে ॥ ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করেছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। আগামী ২২ এপ্রিল সকাল ১০টা থেকে পিএসসির প্রধান কার্যালয়ে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মৌখিক পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১৬ জুন।
মঙ্গলবার পিএসসি এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ও কারিগরি/পেশাগত উভয় ক্যাডারের ৮৯৭ জন এবং সাধারণ ক্যাডারের পদগুলোর ৫ হাজার ৩২৬ জন রেজিস্ট্রেশন নম্বরধারীর মৌখিক পরীক্ষা নির্ধারিত সময়সূচিতে পিএসসির প্রধান কার্যালয় আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত হবে।