ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২

ভিসা দেওয়া প্রতিটা দেশের নিজস্ব এখতিয়ার, ভারতের ভিসা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

কুটনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১৯:০৮, ৮ এপ্রিল ২০২৫

ভিসা দেওয়া প্রতিটা দেশের নিজস্ব এখতিয়ার, ভারতের ভিসা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবিঃ সংগৃহীত

ভিসা দেওয়া প্রতিটা দেশের নিজস্ব এখতিয়ার বাস্বাধীন ব্যাপার। ভিসার ব্যাপারে জোড়াজুড়ির কিছু নেই। কে ভিসা দেবে কে দেবে না সেটি নিতান্তই সে দেশের উপর নির্ভর করবে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া আমরা বিকল্প দেশের সাথেও চেষ্টা করছি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। 
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন এ কথা বলেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রকৃতিতে কোনো ভ্যাকুয়াম থাকে না। এখানে ভিসার অভাবে লোকজন  যেতে না পারলে তারা অন্য কোথাও যাবে। ইতিমধ্যে যাচ্ছেও,  পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় তাদেরকে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করব যাতে করে লোকজনের সমস্যা না হয়। কারণ, আমাদের লোকজন যে যে কারণে ভারতে যেত সেটা যদি অন্য কোনো দেশে সমাধান করা যায় সেখানেই সে সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। ভারত যদি ভিসা দেয় সেটা তাদেরও স্বার্থ উদ্ধার হবে, আমাদেরও হবে। আমরা জানি ভিসা না দেওয়ার কারণে কোলকাতায় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
উস্কানিমুলক বক্তব্য পরিহারের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উস্কানি মুলক বক্তব্য একটি দেশের জন্য কল্যাণকর নয়।  যেকোনো দেশের জন্য ক্ষতিকর। তবে উস্কানি তো শুধুবাংলাদেশ থেকেই দেয়া হয়না তাদের তথা ভারতের বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও দেওয়া হয়। আমরা এসব উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহার চাই। ভারতকেও সে উস্কানিমুলক বক্তব্য পরিহার করতে হবে।
তিস্তার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের সময়ে তিস্তা প্রকল্পে চীনা কোম্পানির অংশগ্রহণের ব্যাপারে আলোচনা হয়। তবে সরকার এ বিষয়ে উদারনীতি গ্রহণ করেছে এবং এ প্রকল্প নিয়ে ভারত বা চীন– উভয়ের সঙ্গেই আলোচনা করার সুযোগ রাখছে। ভারত চাইলে সে আলোচনায় শরীক হতে পারবে। 

তিনি বলেন,‘কোনো বিষয়ে কথা হলেই তো আর সেটির অগ্রগতি হয়ে যায়না।’ সেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা ঝট করে কোনও কিছু প্রত্যাশা করছি না যে, কালকেই কেউ তিস্তা সমস্যার সমাধান করে দেবে।  নদীর পানি নিয়ে চীনের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে।  নদীর পানি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটা শুধু আমাদের জন্য নয় সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। পানির বিশাল বৈষম্য বিশেষ করে পানির সময়ে পানি পাওয়া গেলেও অন্যসময় সেটা অসম থাকে। সে বিষয়ে বাংলাদেশ অগ্রসর হচ্ছে।’
চীন সফরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চীনে কিছু কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। যোগাযোগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকলে অন্যান্য পর্যায়ে সম্পর্ক আগানো সহজ হয়। দুই নেতার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হযেছে। কিছু কাগজপত্র সই হয়েছে। আমার মনে হয়, সফরটি মোটামুটিভাবে একটি প্রভাব রাখতে পেরেছে।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যেসব দেশে গণতন্ত্রের চর্চা নেই সেসব দেশও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কবে হবে তা জানতে চায়। আমাদের সরকারের পরিকল্পনাতেও সেটি রয়েছে।’ ‘নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করে জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ তিনি যোগ করেন যে এ ব্যাপার উপদেষ্টা নিজ থেতেই তো সে কথা  স্বীকার করেছে।
ইতালি যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি কর্মী যাদের ভিসা অপেক্ষমাণ ( পেন্ডিং) আছে, সেটির  সমাধান ইতালির হাতে। আর এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইতালিকে অবিরাম চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ইতালির বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। কিছু সমস্যা আছে যেটাতে আমাদেরও দোষ আছে। নিজেদের ত্রুটি, স্বীকার করা উচিত। কারণ, ৬০ হাজার মানুষের কাগজপত্র ইস্যু হয়েছে সেই কাগজপত্রের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে ভিত্তি সঠিক নয় বলে আমরাও জানি, ইতালিয়ানরাও সেটাকে চিহ্নিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের বলেছে, এগুলো চেকআপ না করে দিতে পারবে না। দুঃখজনক হলেও সত্যি আমাদের কাগজপত্র নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ থেকে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। আর তাদের সন্দেহ অমূলক নয়।
ইতালি যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি কর্মীদের উদ্দেশে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমার সহানুভূতি আছে যারা সাফার করছে। আমি নিশ্চিত তাদের মধ্যে অনেক সঠিক মানুষ আছে। কিন্তু যেটা হয়, সঠিকের সঙ্গে বেঠিক ঢুকে যায় তখন সবগুলো চেকআপ করতে হয়। আর এতে করে সঠিক যারা তাদের সাফার করতে হয়, সেটাই ঘটছে এখানে। এখন তারা যদি আন্দোলন করে তাহলে এর মাধ্যমে সমাধান হবে না। এই সমস্যার সমাধান ইতালিয়ানদের হাতে এবং আমরা তাদের অবিরাম চাপ দিয়ে যাচ্ছি।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হল…
ভিসা দেওয়া প্রতিটা দেশের নিজস্ব এখতিয়ার বাস্বাধীন ব্যাপার। ভিসার ব্যাপারে জোড়াজুড়ির কিছু নেই। কে ভিসা দেবে কে দেবে না সেটি নিতান্তই সে দেশের উপর নির্ভর করবে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া আমরা বিকল্প দেশের সাথেও চেষ্টা করছি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন এ কথা বলেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, প্রকৃতিতে কোনো ভ্যাকুয়াম থাকে না। এখানে ভিসার অভাবে লোকজন যেতে না পারলে তারা অন্য কোথাও যাবে। ইতিমধ্যে যাচ্ছেও, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদেরকে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করবে যাতে করে লোকজনের সমস্যা না হয়। কারণ, আমাদের লোকজন যে যে কারণে ভারতে যেত, সেটা যদি অন্য কোনো দেশে সমাধান করা যায়, সেখানেই সে সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। ভারত যদি ভিসা দেয়, সেটাতে তাদেরও স্বার্থ উদ্ধার হবে, আমাদেরও হবে। আমরা জানি, ভিসা না দেওয়ার কারণে কোলকাতায় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহারের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উস্কানিমূলক বক্তব্য একটি দেশের জন্য কল্যাণকর নয়, যেকোনো দেশের জন্য ক্ষতিকর। তবে উস্কানি তো শুধু বাংলাদেশ থেকেই দেওয়া হয় না, তাদের তথা ভারতের—বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গ থেকেও দেওয়া হয়। আমরা এসব উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহার চাই। ভারতকেও সে উস্কানিমূলক বক্তব্য পরিহার করতে হবে।

তিস্তার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের সময়ে তিস্তা প্রকল্পে চীনা কোম্পানির অংশগ্রহণের ব্যাপারে আলোচনা হয়। তবে সরকার এ বিষয়ে উদারনীতি গ্রহণ করেছে এবং এ প্রকল্প নিয়ে ভারত বা চীন—উভয়ের সঙ্গেই আলোচনা করার সুযোগ রাখছে। ভারত চাইলে সে আলোচনায় শরীক হতে পারবে।

তিনি বলেন, ‘কোনো বিষয়ে কথা হলেই তো আর সেটির অগ্রগতি হয়ে যায় না।’ সেটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা ঝট করে কোনো কিছু প্রত্যাশা করছি না যে, কালকেই কেউ তিস্তা সমস্যার সমাধান করে দেবে। নদীর পানি নিয়ে চীনের সঙ্গে আমাদের একটি চুক্তি আছে। নদীর পানি বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেটা শুধু আমাদের জন্য নয়, সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। পানির বিশাল বৈষম্য, বিশেষ করে পানির সময়ে পানি পাওয়া গেলেও অন্য সময় সেটা অসম থাকে। সে বিষয়ে বাংলাদেশ অগ্রসর হচ্ছে।’

চীন সফরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চীনে কিছু কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। যোগাযোগ সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকলে অন্যান্য পর্যায়ে সম্পর্ক এগোানো সহজ হয়। দুই নেতার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু কাগজপত্র সই হয়েছে। আমার মনে হয়, সফরটি মোটামুটিভাবে একটি প্রভাব রাখতে পেরেছে।’

তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘যেসব দেশে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, সেসব দেশও বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন কবে হবে তা জানতে চায়। আমাদের সরকারের পরিকল্পনাতেও সেটি রয়েছে।’ ‘নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে জনপ্রতিনিধির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’ তিনি যোগ করেন যে, এ ব্যাপারে উপদেষ্টা নিজ থেতেই তো সে কথা স্বীকার করেছে।

ইতালি যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি কর্মী যাদের ভিসা অপেক্ষমাণ (পেন্ডিং) আছে, সেটির সমাধান ইতালির হাতে। আর এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইতালিকে অবিরাম চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

তৌহিদ হোসেন বলেন, ইতালির বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। কিছু সমস্যা আছে যেটাতে আমাদেরও দোষ আছে। নিজেদের ত্রুটি স্বীকার করা উচিত। কারণ, ৬০ হাজার মানুষের কাগজপত্র ইস্যু হয়েছে—সেই কাগজপত্রের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে ভিত্তি সঠিক নয় বলে আমরাও জানি, ইতালিয়ানরাও সেটাকে চিহ্নিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের বলেছে, এগুলো চেকআপ না করে দিতে পারবে না। দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমাদের কাগজপত্র নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন দেশ থেকে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। আর তাদের সন্দেহ অমূলক নয়।

ইতালি যেতে আগ্রহী বাংলাদেশি কর্মীদের উদ্দেশে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমার সহানুভূতি আছে যারা সাফার করছে। আমি নিশ্চিত তাদের মধ্যে অনেক সঠিক মানুষ আছে। কিন্তু যেটা হয়, সঠিকের সঙ্গে বেঠিক ঢুকে যায়, তখন সবগুলো চেকআপ করতে হয়। আর এতে করে সঠিক যারা, তাদের সাফার করতে হয়—সেটাই ঘটছে এখানে। এখন তারা যদি আন্দোলন করে, তাহলে এর মাধ্যমে সমাধান হবে না। এই সমস্যার সমাধান ইতালিয়ানদের হাতে এবং আমরা তাদের অবিরাম চাপ দিয়ে যাচ্ছি।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে আমাদের চাওয়া ছিল তাদের মুখ থেকে স্বীকৃতি আদায় করা। আমরা সেটি করতে সক্ষম হয়েছি। শরণার্থীদের ফেরত নেওয়া ব্যাপারে তাদের স্বীকৃতি পেয়েছি—এখন তাদের স্থায়ী বসবাস ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমেই কেবল তাদের সে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের মেনশন করে বলেন, আপনার নিজেরাও রাখাইন অঞ্চলের বর্তমান অবস্থা জানেন। সেখানে একটি স্থিতিশীল পরিবেশ না হওয়া পর্যন্ত তাদের পাঠানো উচিত হবে না। ১ লাখ ৮০ হাজারের ঘোষণা এসেছে। বাকিদের নেওয়ার ব্যাপারেও আমরা জানতে চাইলে মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই ইতিবাচক সাড়া এসেছে। বাকিদের সে দেশে নেওয়ার পরিবেশ তৈরি করবে। তবে সে জন্য সময় দিতে হবে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। দেশটির জান্তা সরকারের সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। সে পরিস্থিতে বাংলাদেশে অবস্থানরত শরণার্থীরা সেখানে প্রত্যাবর্তন করলে সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। সে জন্যই সময় নিয়ে সামনে এগুচ্ছে সরকার।

মারিয়া

×