
ছবি: জনকণ্ঠ
১০ এপ্রিল সারা দেশে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে। এই পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে নান্দাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। উপজেলার ৭১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ৪ হাজার ৩৭৫ জন পরীক্ষার্থীর কাছে তিনি একটি লিখিত শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। সঙ্গে ৭ ধরনের পরীক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
মঙ্গলবার তাঁর কার্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের ডেকে এই বার্তা ও পরীক্ষা সামগ্রী পৌঁছে দেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার লিখেছেন—
‘একদিন পরেই তোমাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয় সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা। সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন, দোয়া এবং শুভ কামনা। তোমরা তোমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মাইলফলকের একটি সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে রয়েছো এই মুহূর্তে, যা তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নকেই প্রতিফলিত করছে।
কঠোর শ্রম, নিষ্ঠা, একাগ্রতা এবং সততার সাথে এগিয়ে সেই স্বপ্নের পথকেই সহজ করবে তোমরা। এ পথে হতাশা, ব্যর্থতা এবং গ্লানিকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকার সুযোগ নেই। এই গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সাথে সাথে যে চাপ এবং উত্তেজনা আসে, তা অতিক্রম করতে হবে অত্যন্ত ধৈর্য, মনোযোগ এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে।
নিজেদের পরিশ্রমের ওপর আস্থা এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি একাগ্র সাধনা—এই দুই মিশ্রণে তোমরা এগিয়ে যাবে তোমাদের সফলতার পথে। তোমাদের সাফল্য কেবল তোমাদের পরিবারের জন্য নয়—এ সাফল্য তোমাদের শিক্ষক, বিদ্যালয়, উপজেলা ও জাতির।
নান্দাইল উপজেলাকে তোমরা একদিন অত্যন্ত গর্বের সাথে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরবে—এই প্রত্যাশা করছি। এ সময়কালে তোমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য আমি প্রার্থনা করছি। কঠোর শ্রম যেন ফলপ্রসূ ফলাফল বয়ে আনে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় সুযোগের দ্বার উন্মোচন করুক।
তোমাদের আগামীর পথচলা হোক ভীষণ আনন্দময়। ভালো ছাত্রছাত্রী হওয়ার পাশাপাশি তোমরা বেড়ে উঠো একজন মানবিক মানুষ হিসেবে—বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের সারথি হয়ে... এই শুভ কামনায়।’
জানা গেছে, শুভেচ্ছা বার্তা ছাড়াও প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ফাইল, কলম, স্কেল, পেন্সিল, রাবার ও কাটার দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের হাতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনুযায়ী এসব সামগ্রী হস্তান্তর করা হয়। ১০ এপ্রিল পরীক্ষা শুরুর আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে এগুলো তুলে দেওয়া হবে। নান্দাইল উপজেলায় ১৪টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এই বিষয়ে মুশুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান ভূঁইয়া এবং নান্দাইল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, পরীক্ষার আগে একজন ইউএনও শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা বার্তা ও পরীক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন— এটি একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা। এতে পরীক্ষার্থীরা অনেক উজ্জীবিত হবেন।
নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সারমিনা সাত্তার বলেন, আমাদের সন্তানেরা কেবলই পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর/ফলাফলের উপর ভিত্তি করে যেন নিজেদের মূল্যায়ন না করে, সেটিই বলতে চেয়েছি এই চিঠির মাধ্যমে। আগে সকল সন্তানকে মানুষ হতে হবে। সেই সঙ্গে নিজের মেধার প্রতিফলন যাই হোক, তা মেনে নিতে হবে। তবেই আগামী পরীক্ষায় আরও ভালো করবে। একটা চাপের মধ্য থেকে কখনো ভালো কিছু আশা করা যায় না।
এম.কে.