
ছবি : সংগৃহীত
বর্তমান সময়ে অপতথ্য ও গুজবের বিস্তার একটি জাতীয় সমস্যায় পরিণত হয়েছে, যা সমাজে বিভেদ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস , বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামাতে ইসলামীর শফিকুর রহমান এবং সুশাসন নাগরিক সুজনের বদিউল আলম মজুমদারের নামে ভুয়া উক্তি ও তথ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব মিথ্যা তথ্য ডিজিটাল প্রযুক্তির অপব্যবহার করে সুপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যা দ্রুততার সাথে ভাইরাল হয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
ফ্যাক্ট চেক করে দেখা গেছে, ডক্টর ইউনূস কখনোই ফিলিস্তিন ইস্যুকে বাংলাদেশের বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেননি। একইভাবে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নামে প্রচারিত "শেখ হাসিনাকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না" এমন দাবিও সম্পূর্ণ মিথ্যা। এছাড়া জামাত নেতা শফিকুর রহমানের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের ভুয়া উক্তি এবং বদিউল আলম মজুমদারের নামে জুলাই আন্দোলন নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে যমুনা টিভি ও প্রথম আলোর লোগো জাল করে ভুয়া ফটোকার্ড তৈরি করা হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান মোহাম্মদ শামসুদ্দিন এ প্রসঙ্গে বলেন, "এটি একটি সুপরিকল্পিত তথ্যযুদ্ধ, যা মোকাবেলায় দ্রুত ফ্যাক্ট চেকিং ব্যবস্থা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।" অন্যদিকে আইনজীবী ব্যারিস্টার এইচএম সানজিদ সিদ্দিকি মনে করেন, "সাইবার নিরাপত্তা আইনের অধীনে শাস্তির মাত্রা বাড়ানো এবং একটি স্বতন্ত্র জাতীয় ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা গঠন করা এখন সময়ের দাবি।"
এ পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো তথ্য শেয়ার করার আগে তার সত্যতা যাচাই করা, চটকদার শিরোনাম এড়িয়ে চলা এবং সন্দেহজনক কনটেন্ট রিপোর্ট করার মাধ্যমে সাধারণ নাগরিকরাও এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেন। পাশাপাশি, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিতভাবে ফ্যাক্ট চেকিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। মিডিয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকেও তাদের লোগো ও কনটেন্ট জালিয়াতি রোধে কঠোর নজরদারি করতে হবে।
গুজব ও অপতথ্যের বিরুদ্ধে এই লড়াই শুধু সরকার বা প্রতিষ্ঠানের একার পক্ষে জয়লাভ করা সম্ভব নয়। এটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। সঠিক তথ্য শেয়ার করে, সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে আমরা একটি গুজবমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে পারি। জাতীয় স্বার্থে আসুন, আমরা সবাই মিলে গুজবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই এবং সত্যিকারের তথ্য ছড়িয়ে দেই।
সূত্র:https://youtu.be/1XovTEm9ckg?si=hw-3qSPPxUeOcKg4
আঁখি