ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩১

গ্রেফতারের পর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে থানায় নেয়া হয়েছে

প্রকাশিত: ০১:২৭, ৮ এপ্রিল ২০২৫

গ্রেফতারের পর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে থানায় নেয়া হয়েছে

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের হত্যাচেষ্টা মামলায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেফতারের পর রাজধানীর উত্তরপশ্চিম  থানায় নেয়া হয়েছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের অপরাসিত ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বাসায় অভিযান পরিচালনা করে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম জানান ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের বিরুদ্ধে উত্তরা থানায় একজন ছাত্র হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। ছাত্রটি গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। সে এখনো চিকিৎসাধীন। এ  ছাড়াও তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর জলঢাকা এলাকার থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। উত্তর-পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান  বলেন, তাকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত প্রসিকিউটরের দায়িত্বে ছিলেন তুরিন আফরোজ।

উল্লেখ যে,ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ২০ অগাস্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ আদালতেরই সাবেক কৌঁসুলি তুরিন আফরোজসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে হেফাজতের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে তদন্তের আবেদন জানানো হয়।ওই আবেদনে মতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। আইনজীবী তুরিন ২০১৮ ও ২০২৪  সালে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার জন্য নীলফামারী ৩ (জলঢাকা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ অগাস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। দুই দিন বাদে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর একে একে গ্রেপ্তার হতে থাকেন আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ সদস্যরা।একই সঙ্গে সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা ও পুলিশসহ অনেককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সরকার পতনের আট মাসের মাথায় আইনজীবী তুরিন আফরোজকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল পুলিশ।

সরকার পতনের দিন ৫ অগাস্ট বিকালে নীলফামারীর জলঢাকায় ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুরের খবরও আসে। যুদ্ধাপরাধের বিচারে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেয় প্রসিকিউটর ছিলেন আইনজীবী তুহিন আফরোজ। ওই ট্রাইব্যুনাল গঠনের তিন বছরের মাথায় প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি। জামায়াতে ইসলামীর আমির গোলাম আযমের মামলাসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলা পরিচালনায় ভ‚মিকা রাখেন তিনি। তাকে ২০১৭ সালের নভেম্বরে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মুহাম্মদ ওয়াহিদুল হকের বিরুদ্ধে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে ওই মামলা পরিচালনার সময় অভিযোগ ওঠার পর ওই মামলাসহ ট্রাইব্যুনালের সব মামলা পরিচালনার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় ২০১৮ সালের মে মাসে।

যুদ্ধাপরাধ মামলার আসামি ওয়াহিদুলের সঙ্গে গোপন বৈঠকের ঘটনায় ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর পদ থেকে তাকে অপসারণ করে ওই সময় মতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার। বর্তমানে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ওই সময়কার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তখন এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তুরিন আফরোজকে অব্যাহিত দেওয়াটা জরুরি হয়ে পড়েছিল।

আসিফ

×