পারভীন বেগম
রাজৈরে মানবপাচার মামলার সাক্ষী হওয়ায় প্রতিশোধ নিতে ৪ জনের নামে ধর্ষণ মামলার আবেদন করা মানবপাচারকারী দালাল পারভীন বেগমকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে দালাল পারভীন মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ মামলার আবেদন করায় আদালত ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদ খান। দালাল পারভীন রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের রেজাউল মোল্লার স্ত্রী। পুলিশ জানায়, পারভীনের বিরুদ্ধে একাধিক মানবপাচার মামলা রয়েছে।
জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় গ্রামের শাহআলম মোল্লার ছেলে নূর আলম মোল্লাকে ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখায় পারভীন ও তার স্বামী রেজাউল মোল্লা। পরে ২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি তার ছেলে সাকিব মোল্লার মাধ্যমে নূর আলমকে লিবিয়ার ত্রিপলিতে নিয়ে যায়। সেখানে আটকে রেখে নির্যাতন করে ধাপে ধাপে সর্বমোট ১৭ লাখ ৮ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে দালাল পারভীন ও তার চক্রের লোকজন।
এরপর আরও মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা চালালে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাহায্যে মাফিয়াদের কাছ থেকে নূর আলমকে উদ্ধার করা হয়। গত বছর ১৭ জুলাই নূর আলমকে আহত অবস্থায় দেশে পাঠায় দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় ছেলের চিকিৎসা শেষে চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর মা রাশিদা বেগম।
এ মামলায় পারভীন বেগমকে প্রধান আসামিসহ তার স্বামী রেজাউল মোল্লা (৫০), ছেলে সাকিব মোল্লা (২৬) ও আরেক মানবপাচারকারী শাহীন মিয়াকে আসামি করা হয়। এ খবর জানতে পেরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় পারভীন ও তার স্বামী রেজাউল। এরই প্রতিশোধ নিতে ও মামলাটি ধামাচাপা দিতে গত ২০ মার্চ মানবপাচার মামলার ৩ ও ৪ নং সাক্ষী বখতিয়ার মোল্লা ও শাহজালাল মোল্লাসহ ৪ জনের নামে ধর্ষণ মামলার আবেদন করেন পারভীন বেগম। পরে রাজৈর থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে রবিবার পারভীনকে গ্রেপ্তার করে।
রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুদ খান জানান, ‘মানবপাচারকারী দালাল পারভীন বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মানবপাচার মামলা রয়েছে।’
