
ছবি: প্রতীকী
শরীয়তপুরে জাজিরার বিলাসপুরে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ফরিদ হোসেন (২৮) নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা পযর্ন্ত মামলার প্রধান আসামী আব্দুল কুদ্দুস বেপারীসহ মোট ৯ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করে প্রত্যেককে ৫দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) শরীয়তপুর আদালতে তাদের রিমান্ড আবেদনের শুনানী হবে বলে জানিয়েছেন জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. দুলাল আকন্দ।
এদিকে রবিবার সকালে ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকা থেকে র্যাব-৮ ও র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা মামলার প্রধান আসামী বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কুদ্দুস বেপারীকে জাজিরা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছেন। আব্দুল কুদ্দুস বেপারী গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
এলাকায় সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, গত দেড়যুগে বিলাসপুরে এই দু’টি বিবদমান গ্রুপের মধ্যে অর্ধশত সংঘর্ষে বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ১০ জন। আহত হয়েছে প্রায় সহস্রাধিক মানুষ। অনেকে বোমার আঘাতে পঙ্গু হয়ে গেছে। বোমা বানাতে গিয়ে তা বিষ্ফোরণে অনেকের হাতের কব্জি, মুখমন্ডল উড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। বিলাসপুরের মেহের আলী মাদবর কান্দি গ্রামের বৃদ্ধা মর্জিনা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নয়ন মিয়া ও সাব্বিরসহ স্থানীয়রা বলেন, বিলাসপুরের কিছু লোকজন নিজেরাই বোমা বানাতে পারে। যে কোন সংঘর্ষের সময় এখানে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার প্রধান হাতিয়ার হলো বোমা।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৯ সালের দিকে আব্দুল কুদ্দুস বেপারী ও আব্দুল জলিল মাদবরের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। তারা দু’জনই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত। এদের মধ্যে আব্দুল জলিল মাদবর আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য বি এম মোজাম্মেল হকের সমর্থক এবং আব্দুল কুদ্দুস বেপারী আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর সমর্থক। তাঁদের সমর্থনে থেকে পক্ষ দু’টি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে। দুই পক্ষই সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে।
স্থানীয়রা দাবি করেছেন, আব্দুল কুদ্দুস বেপারী ও আব্দুল জলিল মাদবর এই উভয় দলের সমর্থকরাই বোমা বানাতে পারদর্শী। তারা নৌপথে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য এনে এলাকায় বসে হাত বোমা তৈরি করেন।
এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখার জন্য তাঁরা বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় জড়িয়ে পড়েন। তখন হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটে মেতে ওঠেন তারা। শরীয়তপুর পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, বোমা বানানোর উৎস ও এর সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে তা নির্মুল করার জন্য কাজ করছে পুলিশ প্রশাসন।
শহীদ