
ছবিঃ প্রতীকী অর্থে
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চাচাতো বোনকে ধর্ষণ ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দুই মাসে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে নাঈম নামের এক যুবকের বিরুদ্ধে। এতে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে ১৫ বছরের ওই মাদ্রাসা ছাত্রী।
এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদি হয়ে রোববার (৬ এপ্রিল) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পাঁচ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস মামলাটি গ্রহণ করে আমতলী থানার ওসিকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করে আইনগত ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন। ধর্ষক নাঈম ওই ছাত্রীর আপন চাচাতো ভাই।
আসামীরা হলো, বরগুনার আমতলী উপজেলার চলাভাঙ্গা গ্রামের সেলিম হাওলাদারের ছেলে মোঃ নাঈম (২৩)। তার বাবা মোঃ সেলিম হাওলাদার, মা মোসাঃ হাওয়া বেগম, ভগ্নিপতি মোঃ তুহিন ও বোন মোসাঃ সাথী বেগম। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা শিপু।
জানা গেছে, আসামী নাঈমের চাচি অভিযোগ করেন, তার স্বামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। তাকে চিকিৎসার জন্য গত ২৭ জানুয়ারি পটুয়াখালী হাসপাতালে নিয়ে যায়। ওই সময় দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া কন্যা মাদ্রাসা ছাত্রী ঘরে একা থাকে। আসামী নাঈম ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে ওইদিন বেলা ১১ টার দিকে ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে নাঈম। এরপর আসামী নাঈম ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। গত ২০ মার্চ সকালে ভিকটিমের মা প্রতিবেশীর বাড়ি যায়। ওই ফাঁকে নাঈম ওই ছাত্রীকে ঘরে ঢুকে আবারো ধর্ষণ করে। মা (মামলার বাদি) ঘরে আসলে আসামী নাঈম টের পেয়ে দ্রুত ঘর থেকে বাদির সামনে দিয়ে পালিয়ে যায়। বাদি তার মেয়ের নিকট জানতে চাইলে মেয়ে অকপটে নাঈম তাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে রবিবার (৬ এপ্রিল) বরগুনা নারী ও শিশু আদালতে নাঈমকে প্রধান আসামী করে পাঁচজনের নামে মামলা করেছেন।
ওই ছাত্রীর মা (মামলার বাদি) বলেন, আমাদের দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে নাঈম আমার ভাসুরের ছেলে, আমার মেয়েকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে আমার ছোট মেয়েকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। আমার মেয়ে এখন দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমরা সমাজে মুখ দেখাতে পারি না। স্বামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। অভাবের সংসার। মেয়ের পড়াশোনা এখন বন্ধ। আমরা ঘর থেকে বের হতে পারি না। গ্রামের লোকজন আমাদের ভালো চোখে দেখে না। আমি ও আমার স্বামী নাঈমের বাবা, মা, বোন ও ভগ্নিপতির নিকট গিয়েছি। নাঈম যেন আমার মেয়েকে বিয়ে করে সন্তানের স্বীকৃতি দেয়। নাঈমের বাবা, মা, বোন ও ভগ্নিপতি আমার মেয়ের গর্ভের সন্তান ফেলে দিতে বলে। তারা নাঈমের দোষ দেখে না।
এ বিষমে আসামী নাঈমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এ ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ার পর থেকে নাঈম এলাকা ছাড়া রয়েছে।
আমতলী থানার ওসি মো.আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, আদালতের নথিপত্র পেলে আসামীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইমরান