
ছবি: জনকণ্ঠ
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ভাঙ্গামোড় নওদাবস গ্রামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে একটি দিনমজুর পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে হোসেন আলী নামের এক দিনমজুরের স্বপ্নভরা বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মশা তাড়াতে বাড়ির গোয়ালঘরে প্রচলিত গ্রামীণ পদ্ধতিতে 'ভূতি' (ধোঁয়া) দেওয়া হচ্ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেই আগুন বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শে এসে মুহূর্তেই দাহ্য রূপ নিয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি করে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে পুরো বাড়িতে এবং মুহূর্তেই ঘরে থাকা সমস্ত আসবাবপত্র, ধান-চাল, কাপড়চোপড়, দুটি গরু, একটি ছাগল, কয়েকটি হাঁস-মুরগি ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
খবর পেয়ে নাগেশ্বরী ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে সবকিছু পুড়ে গেছে। স্থানীয়রা জানান, তাদের তাৎক্ষণিক প্রচেষ্টায় আশপাশের ঘরবাড়িগুলো রক্ষা পেলেও হোসেন আলীর পরিবার পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসীর ধারণা, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক আট লাখ টাকা।
প্রতিবেশী মোজাম্মেল হক বলেন, "হঠাৎ দেখি আগুনের লেলিহান শিখা। আমরা সবাই দৌড়ে গিয়ে পানি ও বালুর বস্তা দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি, কিন্তু কিছুই আর বাঁচানো যায়নি।"
বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা দ্রুত সহায়তার জন্য প্রশাসন এবং সমাজের দানশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের খবর শুনে রোববার (৬ এপ্রিল) সকালে কুড়িগ্রাম-১ আসনের নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারীর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নেন। তিনি হোসেন আলীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, জরুরি সহায়তা না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি চরম দুর্দশার মধ্যে পড়ে যাবে।
সায়মা ইসলাম