
একসময় মানুষের মনেরভাব আদান প্রদানের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। চিঠির মাধ্যমে মানুষ প্রিয়জনের খোঁজ খবর নিত। হলুদ রংয়ের পোস্ট কার্ডে কিংবা সাদা কাগজে চিঠি লিখতো প্রিয়জনদের কাছে। এখন আর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে দাওয়াত কিংবা কোন খবরের জন্য চিঠির প্রয়োজন হয় না। ভিন্ন রকমের অনুভূতি আর অনাবিল আনন্দে ভরপুর ছিল হাতের লেখা সেই চিঠিতে। সময়ের পরিবর্তনে এখন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী সেই চিঠি।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় সেগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। যে কয়টা চোখে পড়ে সেগুলোও ব্যবহার না হওয়ায় মরচে ধরে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটলেও পাশাপাশি বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হবে ডাক বিভাগের মাধ্যমে এমনটাই মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
প্রযুক্তির উন্নয়নে এখন বিলুপ্তির পথে বাংলার ঐতিহ্য চিঠির প্রচলন। এক সময় মুকসুদপুরের বিভিন্ন ইউনিয়নে দেখা যেতো চকচকে লালচে রংয়ের চিঠির বাক্সগুলো। এখন আর তেমনটা চোখে পড়ে না।
বিভিন্ন হাটবাজার আর অলিগলিতে এখনো কিছু ডাকবাক্স দেখা যায় জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বর্তমান আধুনিক যুগে চিঠির ব্যবহারে এসেছে পরিবর্তন। যুক্ত হয়েছে প্রযুক্তির ইন্টারনেট। বর্তমানে মেসেঞ্জার আর হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মুহূর্তেই এখন সমস্থ খবর পৌঁছানো সম্ভব হলেও তাতে নেই কোন অনুভূতি আর ভালবাসা।
চিঠির মাধ্যমে যে আন্তরিকতা আর ভালবাসা ছিল বর্তমান প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সেটা এখন আর নেই। এখন মানুষ ইমু, হোয়াটসঅ্যাপ আর মেসেঞ্জারে তথ্যের আদান প্রদান করলেও চিঠির মতো আন্তরিকতা আর ভালবাসা কাজ করে না। প্রযুক্তির উন্নয়ন হওয়ায় স্বল্প সময়ে এখন মানুষ তথ্যের আদান প্রদান করে থাকে।
আগে গ্রামগঞ্জের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রানাররা তাদের প্রিয়জনদের পাঠানো চিঠি পৌঁছে দিত। এখন আর যেতে হয় না। মানুষ এখন মোবাইলের মাধ্যমেই তাদের সব তথ্য আদান প্রদান করে থাকে। এখন যাও কিছু আসে তাও সরকারি বেসরকারি অফিসে আদালতের। চিঠির আদান প্রদান না থাকায় ডাক বাক্সগুলো অলস পড়ে আছে। ব্যবহার না হওয়ায় মরচে ধরে জং পড়ে গেছে। মানুষ এখন মেসেঞ্জার আর হোয়াটসঅ্যাপেই কথাবার্তা বলে থাকে।
মানুষ এক সময় তাদের জরুরি সংবাদগুলো প্রিয়জনদের কাছে পৌঁছে যেত এ চিঠির মাধ্যমে। তখন পোস্ট অফিসই ছিল আমাদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। চিঠিটা যদি গুরুত্বপূর্ণ না হতো তাহলে কবি শিল্পি সাহিত্যিকরা এ চিঠিকে এত গুরুত্ব দিত না। আমাদের উচিৎ হবে আমরা যেন আমাদের এ ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখি সেই চিঠির মাধ্যমে।
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয় সকল তথ্যের আদান প্রদান করায় হাতে লিখা চিঠির প্রচলন কমে গেছে। এখন যাও কিছু চিঠি ডাক বিভাগের মাধ্যমে আসে সেগুলোর অধিকাংশই সরকারি চিঠি বা নোটিশ।
রুদ্র কমল বলেন, বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নয়নে চিঠির আদান প্রদান মানুষের কাছে এখন নিষ্প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। মানুষ এখন মোবাইলের মাধ্যমে বিশ্বের সকল স্থানেই মুহূর্তেই কথা বলতে পারে বলে পোস্ট অফিসের চাহিদা কমে গেছে। ডাক বিভাগকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে আমাদের চিঠির প্রচলন ধরে রাখতে হবে।
রাজু