
ছবি: সংগৃহীত।
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পিতার বিরুদ্ধে ১৫ বছর বয়সী নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভুগির মা বাদী হয়ে গত ২৫ মার্চ এক মামলা দায়ের করেন। পরবর্তিতে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকার ইটভাটা থেকে অভিযুক্ত পিতা আলাল উদ্দিন (৫৫) কে আটক করা হয়। আলাল ২নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ফাড়ংপাড়া গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে।
মামলা সুত্রে জানাগেছে, ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানি করে আসছিল। গত পাঁচ মাস আগে মেয়ের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে তাকে। ঐ দিনের পরে একই রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। ধর্ষনের কথা কারো কাছে বললে পরিবারের সবাইকে খুনের হুমকি দিতো অভিযুক্ত পিতা। প্রাণ ভয়ে বিষয়টি কাউকে বলেনি ধর্ষণের স্বীকার হওয়া মেয়ে। তবে ঘটনার প্রায় কয়েক মাস যেতেই মেয়ের শরীরের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। গর্ভবতী মেয়েদের মতো বারবার বমিসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিলে বাবা দুর্গাপুর ফারিহা ডায়াগনোষ্টিক সেন্টারে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করায়। পরে মেয়ের গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি জানতে পারে। পরবর্তিতে কৌশলে মেয়েকে নিয়ে ময়মনসিংহের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে সকলের অজান্তে গর্ভপাত ঘটায়।
গর্ভপাত ঘটানোর পরে মেয়ে শারীরিক ভাবে একটু সুস্থ্য হওয়ার পর, আবারও মেয়ের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা চালায় তার বাবা। পরবর্তিতে ওই মেয়ে বিষয়টি তার বড় বোনকে জানালে সে পরিবারের অন্যদের বলে দিলে ধর্ষণের বিষয়টি এরপরই জানাজানি হয়ে যায়। এদিকে ধর্ষণের বিষয়টি জানাজানির পর থেকেই অভিযুক্ত বাবা গা ডাকা দিয়েছিলো।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী মেয়ের মা বলেন, এ ঘটনা আমার বড় মেয়ের কাছ থেকে শুনছি। আমি এইসব নিয়ে কথা বলতেও পারি নাই কোনদিন। এনিয়ে আমাকেসহ ভুক্তভুগি মেয়েকে চোরের মতো মারধর করতো। এই ঘটনার সাথে আমার সতিনও জড়িত আছে। আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, এ ঘটনায় মামলা হওয়ার পরেই তাঁকে ধরতে বিভিন্ন কায়দায় অভিযান শুরু করেছি। পরবর্তিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে ময়মনসিংহের ত্রিশাল এলাকার ইটভাটা থেকে তাকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে বিজ্ঞ আদলতে সোপর্দ করা হয়েছে। সে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধিত ২০২০), তৎসহ ৩১৩ দঃ বিঃ ১৮৬০, (পিতা কর্তৃক মেয়েকে ধর্ষণ) মামলার এজাহারনামীয় আসামী।
সায়মা ইসলাম