ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

নাঙ্গলকোটে ঠান্ডা গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি

বেলাল হোসেন রিয়াজ, সংবাদদাতা, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ১ এপ্রিল ২০২৫

নাঙ্গলকোটে ঠান্ডা গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি

ছবিঃ সংগৃহীত

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে দিনে প্রচণ্ড গরম, রাতে ঠান্ডা জনিত কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে চৈত্রের গরমে দিনে তীব্র তাপদাহ ও রাতে ঠান্ডার কারণে বাড়ছে রোগবালাই। আর তাতেই আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধ বয়সী লোকেরা। ডায়রিয়া জনিত রোগে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বেশিরভাগ শিশু ও বৃদ্ধ বয়সের লোকেরা ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছেন। চৈত্র মাসের দিনের প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশুরাই বেশি কষ্ট পাচ্ছে। দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা কারণে তাপমাত্রার তারতম্যে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসক ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

মঙ্গলবার ১লা এপ্রিল নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায় ১ ঘণ্টার মধ্যে ডায়রিয়া জরুরি বিভাগে একাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হেসাখাল ইউপির পাটোয়ার গ্রামে ছাদেক হোসেনের ছেলে প্রবাসী হায়াতুন্নবী (৪৫), হাসানপুর গ্রামের আবু বকরের ছেলে জাহাঙ্গীর (৬০), বটতলী ইউপির নারায়ণ বাতুয়া গ্রামের জসিম উদ্দিন (৭), জোড্ডা ইউপির হাসানের ছেলে এয়াকুব (৯), ঢালুয়া ইউপির আমজাদ হোসেনের ছেলে আবদুল করিম (৮) সহ আরও অনেকে রোটাভাইরাসের চিকিৎসা নিয়েছে।

এছাড়াও গত ৪ দিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ৫০ জনের মতো ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. আরিফ এমরান। এ বিষয়ে তিনি আরও জানান, ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে মৌসুমি জ্বরসহ এ সময় শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, ব্রংকিওলাইটিস, সাইনোসাইটিস, টনসিলাইটিস, অ্যাজমা, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। অনেকে সাধারণ সর্দি-কাঁশি, ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া চৈত্রের প্রথম থেকে ঠান্ডা গরম, ধূলা-বালুতে বাহিরের খাবার খাওয়া, গ্রামের অধিকাংশ পুকুরগুলোতে পানি কমে যাওয়ার ফলে ময়লা যুক্ত পানি দিয়ে ভাত রান্না করা সহ একাধিক কারণে গত কয়েকদিনে সরকারি হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে শিশু সহ সব বয়সী রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এরকম সময়ে শিশু ও বৃদ্ধদের সুস্থ রাখার জন্য ধুলোবালি ও ঠান্ডা পরিবেশ থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।

নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বেলায়েত হোসেন বলেন, চৈত্রের দিনে প্রচণ্ড গরম, রাতে ঠান্ডা সহ তাপমাত্রার তারতম্য ও ঋতু পরিবর্তনজনিত কারণে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায়। ফলে বয়স্ক ও শিশু উভয়ের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া ও শ্বাসযন্ত্রজনিত রোগের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি হয়। কারণ শিশু ও বৃদ্ধদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। দিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই সময় শিশুদের খোলা মেলা ঠান্ডা জায়গায় রাখতে হবে। গরমের সময় বিনা কারণে বাহিরে ঘুরাফেরা করা কমিয়ে দিতে হবে এবং বাসি খাবার থেকে বিরত থাকতে হবে, প্রতিদিনের খাবার ভালো করে সিদ্ধ করতে হবে এবং টাটকা খাবার খেতে হবে।
 

মারিয়া

×