
ছবিঃ সংগৃহীত
নোনা পানিতে সব থৈ থৈ করছে। কিন্তু এটি কোনো নদীর দৃশ্য নয়, এটি ইটবাড়িয়া গ্রামের একটি বিলের দৃশ্য। সম্পূর্ণটা আবাদি জমি। আমন মৌসুমে শতভাগ জমিতে ধানের আবাদ হয়। এখনো ফেলন ডাল, সূর্যমুখি, ভূট্টাসহ বিভিন্ন রবিশস্যের ফলন্ত ক্ষেত রয়েছে বিলের অনেক জমিতে। ঈদের দুই দিন আগেও ছিল শুকনো, ফেটে চৌচির হওয়া মাঠ। এখন নোনা পানিতে সব সয়লাব হয়ে গেছে। অমাবস্যার প্রভাবে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারে গ্রামের সম্পূর্ণ খালসহ উপচে বিল পর্যন্ত একাকার হয়ে গেছে। মাঝের খেয়ার খন্দকার বাড়ি সংলগ্ন এক ভেন্টের স্লুইসটির গেট না থাকায় জোয়ারে নোনা পানিতে গোটা এলাকার কৃষকের সর্বনাশ হয়ে গেছে। এখন ডালসহ সূর্যমুখি, ভূট্টার ক্ষেত সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। শুধু ফসল নয়, এলাকার অনেক কৃষকের মাছের ঘেরও নোনা পানিতে ডুবে গেছে। পুকুরেও নোনা পানি ঢুকেছে। রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের পানি, এমনকি গবাদিপশুর খাবারের পানির সংকট শুরু হয়ে গেছে। গ্রামটির বিস্তীর্ণ আবাদি জমি এখন প্রায় হাটু সমান নোনা পানিতে ডুবে গেছে।
কৃষক মাহতাব হোসেন জানান, হঠাৎ করে নোনা পানি ঢুকে বিল ডুবে গেছে। ফেলন ডালের ফলন ধরা গাছগুলো এখন নষ্ট হয়ে যাবে। আর কয়েকদিন পরে ফলন পাওয়ার কথা ছিল, এমনটাই তার দাবি। চোখের সামনে তার রবি শস্যের ক্ষতির কথা জানালেন। কৃষক দেলোয়ার তালুকদার জানান, স্লুইসটি আগেই জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। গেট নেই, পানি ওঠা-নামা করত। কিন্তু অমাবস্যার এই জোয়ারে পানির খুব বেশি চাপ ছিল। খাল ভরে টোটাল বিল ডুবে গেছে। তার চাষ করা প্রায় চার বিঘা জমির রবিশস্যের ক্ষেতেও নোনা পানি ঢুকেছে। এখন সব পচে যাচ্ছে। গ্রামটির সকল শ্রেণির কৃষকের নোনা পানির কারণে সর্বনাশ হয়ে গেছে। এমনিতেই ভরা চৈত্রে খালবিল ফেটে চৌচির হয়ে ছিল। পুকুর কিংবা খালের তলদেশে যতটুকু মিঠাপানি ছিল, তা মানুষ রান্নাসহ নিত্যদিনের কাজে ব্যবহার করত। কিন্তু নোনা পানিতে সব ডুবে গিয়ে এখন ব্যবহারের পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষকসহ গ্রামের সাধারণ মানুষের এখন ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
অফিস বন্ধ থাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, ঈদের পরে বিষয়টি সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মারিয়া