
ছবিঃ সংগৃহীত
বোয়ালমারী থানার মানব পাচার মামলার পলাতক আসামি মঞ্জুরুল ইসলাম (৪৩) বান্ধবীর সাথে দেখা করতে গিয়ে আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে।
বোয়ালমারী থানা পুলিশ মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) বিকেলে আসামিকে ফরিদপুর আদালতে প্রেরণ করেছেন। এর আগে ঈদের দিন বিকেলে আলফাডাঙ্গা পৌর সদরের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাতেই আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ তাকে বোয়ালমারী থানায় হস্তান্তর করে। এ মামলায় গত ৯ মার্চ মো. আবুল বাশার (৫৪) ও মো. আজাদ খাঁকে সালথা উপজেলার বাহিরদিয়া গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, আত্মীয়তার সূত্র ধরে সালথা উপজেলার বড় বাহিরদিয়া গ্রামের মো. বাদশা মোল্যার ছেলে লিবিয়া প্রবাসী মো. ইনামুল মোল্যা (৩৫) বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের শেখর গ্রামের ইউনুস বিশ্বাসকে (৩২) ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। দেশে থাকা এনামুলের বাবা বাদশা মোল্যা, ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম, চাচা আবুল বাশার, স্ত্রী তানিয়া বেগম ও আত্মীয় মো. আজাদ খাঁ মিলে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে এ টাকা নেয়। আসামিরা সবাই মিলে মানব পাচার চক্র গড়ে তোলে। লিবিয়ায় বসে এই চক্রের নেতৃত্ব দেয় ইনামুল মোল্যা।
গত ১৫ জানুয়ারি ইউনুস বিশ্বাস লিবিয়া থেকে দেশে ফিরে আসামিদের বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চায়। আসামীরা ইউনুসকে টাকা ফেরত না দিয়ে হুমকি ধমকি দেয়। এ ঘটনায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি মানব পাচারের অভিযোগ এনে ফরিদপুর মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনাল আদালতে এনামুলসহ ৬ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দেয়। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বোয়ালমারী থানায় পাঠায়। থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলা নং ১০।
ভুক্তভোগী ইউনুস বিশ্বাস বলেন, আসামিরা আরো অনেক লোককে ইতালি নেয়ার প্রলোভন দিয়ে লিবিয়া নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এই ঘটনায় আমার পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। আরো অনেক পরিবার আর্থিকভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। আত্মীয়রা যে এভাবে আমাদের সর্বশান্ত করে দিবে, তা কখনো ভাবতে পারিনি। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোয়ালমারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রশিদ বলেন, মানব পাচার মামলার প্রধান আসামি মঞ্জুরুল ইসলাম আলফাডাঙ্গায় বান্ধবীর সাথে দেখা করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। আলফাডাঙ্গা থানা পুলিশ বোয়ালমারী থানায় আসামিকে হস্তান্তর করে। এ মামলার আরো দুই আসামিকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
মারিয়া