ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

ঈদুল ফিতরের টানা ছুটির ২য় দিনে খাগড়াছড়িতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক

জীতেন বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২১:৪২, ১ এপ্রিল ২০২৫

ঈদুল ফিতরের টানা ছুটির ২য় দিনে খাগড়াছড়িতে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক

ছবিঃ সংগৃহীত

ঈদুল ফিতরের টানা ছুটির ২য় দিনে খাগড়াছড়িতে এবার রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক এসেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে পাহাড়ি কন্যা খাগড়াছড়িতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছেন হাজারো সৌন্দর্য্য পিপাসু পর্যটক। ঈদের দিন থেকেই খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোতে ছিলো পর্যটকদের ভিড়। তবে কেন্দ্রগুলোতে বাইরের পর্যটকের চেয়ে স্থানীয় পর্যটকের সংখ্যা বেশি। আগামী ছুটির দিনগুলোতে জেলার বাইরের পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে পারে, এমনটাই ধারণা করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে নয়নাভিরাম নানান দৃশ্য, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বৈচিত্র্যময় জীবনধারা, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, প্রকৃতি তৈরীর নজরকাড়া হাজারো চিত্র। চারপাশে বিছিয়ে রাখা শুভ্র মেঘের চাদরের নিচে রয়েছে সবুজ বনরাজিতে ঘেরা ঢেউ খেলানো অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়। তার মাঝ দিয়ে চলে গেছে আঁকা-বাঁকা সড়ক। খাগড়াছড়ির রিছাং ঝর্ণা, তৈদুছড়া ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা, আলুটিলার রহস্যময় সড়ক, জেলা পরিষদ পার্কের জুলন্ত সেতু, মায়াবিনী লেক, দেবতা পুকুর, জেলার সীমান্ত শহর রামগড়ে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) বর্তমানে বিজিবি’র ‘জন্মস্থান’, কৃত্রিম লেক ও রামগড় জুলন্ত সেতুসহ প্রতিটি পর্যটন স্পটে এখন পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। ছুটিতে খাগড়াছড়ির এ সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঝর্ণার শীতলতায় গা ভাসাতে বিপুল সংখ্যক পর্যটক ছুটে এসেছেন। ফলে অতিরিক্ত পর্যটকের ভারে পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে খাগড়াছড়িতে আসা পর্যটকদের থাকার-খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে বহু হোটেল ও রেস্টুরেন্টে।

ঘুরতে আসা পর্যটকরা জানান, তারা পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে পরিবার পরিজন নিয়ে এই ঈদে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলোতে ঘুরতে এসেছেন।

খাগড়াছড়ির হর্টিকালচার পার্কের ব্যবসায়ী টিটু চাকমা জানান, দীর্ঘ এক মাস রোজার সময় পর্যটক না আসায় তাদের ব্যবসা হয়নি। তবে ঈদের দিনে প্রচুর পর্যটক আসায় তাদের বেচাবিক্রি বেড়েছে। তিনি জানান, আগামীতে আরো বাড়তে পারে।

খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা থৈই অংগ্য মারমা জানান, ঈদের দিনে তাদের প্রায় ৫ হাজার পর্যটক এসেছেন। আগামীতে আরো আসবেন বলে মনে করছেন। একই কথা জানান আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রের কোকোনাথ ত্রিপুরা। তিনি জানান, ঈদের ২য় দিনে আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্রে ৪ হাজার টিকেট বিক্রি হয়েছে।

এদিকে, খাগড়াছড়ি টুরিস্ট পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিশাত রায় জানান, পর্যটকরা যাতে নিরাপদভাবে ঘুরতে পারেন, সে ব্যবস্থা নিয়েছে টুরিস্ট পুলিশ ও জেলা পুলিশ।

উল্লেখ্য, ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ির দূরত্ব ৩১৬ কিমি এবং চট্টগ্রাম থেকে ১০৯ কিমি। রাজধানী শহর ঢাকার কমলাপুর, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, কলাবাগান থেকে সরাসরি নানা বিলাসবহুল পরিবহনের বাসযোগে খাগড়াছড়ি আসতে পারেন। তবে আসার আগে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে আসতে হবে, অন্যথায় পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়তে হতে পারে।

খাগড়াছড়ির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঝর্ণার শীতল পানি আপনাকেও হাত ছানি দিয়ে ডাকছে। বর্তমানে খাগড়াছড়ি এখন একটি পর্যটন নগরী, ভবিষ্যতে খাগড়াছড়িতে যেন আরো বহু পর্যটকের আগমন ঘটে, এর সৌন্দর্য বর্ধনে প্রশাসন আরো কাজ করবে—এটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
 

মারিয়া

×