ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত পায়রা সেতু

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল

প্রকাশিত: ২১:০২, ৩১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২১:০৮, ৩১ মার্চ ২০২৫

ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত পায়রা সেতু

ছবিঃ সংগৃহীত

ঈদের দিন (৩১ মার্চ) থেকে দর্শনার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পায়রা সেতু। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করতে এসেছেন নিজ জেলায়। এসব মানুষ ঈদের আনন্দে ঘুরতে এসেছেন পায়রা সেতুতে।

ঈদের দিন (সোমবার) ৩১ মার্চ বিকেল থেকেই পায়রা সেতু মুখরিত হয়ে উঠতে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী ও শ্রেণিপেশার মানুষের পদচারণায়। ঈদে বাড়তি আনন্দ আর বিনোদনের জন্য পটুয়াখালী জেলা শহর ও বরিশাল বাকেরগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে নারী-পুরুষ এবং শিশু-কিশোররাও ভিড় করছে পায়রা সেতুতে। দর্শনার্থীদের ভিড় জমায় ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট, চটপটি-ফুসকা, ছোলা-বাদাম বিক্রেতাদের বেচা-বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় খুশি হকার ও ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।

এক্সট্রাডোজড কেবল স্টেইড প্রযুক্তিতে দেশের দ্বিতীয় পায়রা সেতু। সেতুটি ইতিমধ্যে যুক্ত করেছে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার সাথে। বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে অর্থনীতিতে। এটি চালু হওয়ায় দেশের যেকোন স্থান থেকে সর্বদক্ষিণে উপকূলের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সহজ হয়েছে। সড়ক পথের যাত্রী ও যানবাহন চালকদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। ভোগান্তি কমেছে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলবাসীর। দিনে দিনে সম্প্রসারণ ঘটছে নানান ধরনের ব্যবসায়। 

সেতুটি বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা নদীর উপর দিয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা হয়ে বয়ে গেছে দুমকি উপজেলার উপর দিয়ে। সেতুটির কাছাকাছি উপজেলা বাকেরগঞ্জ, দুমকি, বগা, বাউফল, কাঠালতলী, বেতাগী মির্জাগঞ্জ, নলছিটি সহ বেশ কয়েকটি জেলা। উপজেলা শহরে নেই তেমন কোন পার্ক কিংবা পর্যটন কেন্দ্র। যে কারণে পায়রা নদীতে নির্মিত এই সেতুই এখন বিভিন্ন উপজেলা বাসীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। 

দৃষ্টিনন্দন সেতুটিতে উৎসবে আনন্দ করতে বিনোদন প্রেমীরা ছুটে আসেন। ঈদের দিন থেকেই আমন্ত্রণ-নিমন্ত্রণ পর্ব চলছে। একইসঙ্গে চলছে ঘুরে বেড়ানো। পায়রা সেতুর কাছাকাছি কয়েকটি উপজেলায় খোলা জায়গা, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ঈদ উদযাপনের সঙ্গী হয়েছে এই সেতুটি। দেখে মনেই হয় না এ শহরে কোনো দুঃখ আছে। এ যেন আনন্দ নগরী। এ উৎসব যেন ফুরোবার নয়। উৎসবের রঙটা মূলত ছড়িয়ে দিচ্ছে শিশু-কিশোররা।

ঈদের দিন থেকেই নারী-শিশুসহ দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। রাতের নয়নাভিরাম পায়রা সেতু, মুগ্ধ করে সবাইকে পায়রা সেতু দক্ষিণ অঞ্চলের এখন নতুন একটি পর্যটন ও বিনোদন স্পটে পরিণত হয়েছে। ঈদের ছুটিতে সকাল, বিকেল ও সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাজার হাজার দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবসহ ঘুরতে আসছেন অনেকে।

পায়রা নদীর উপর নির্মিত দৃষ্টিনন্দন সেতুর সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলছেন দর্শনার্থীরা। সেতু কেন্দ্রিক আগত নারী-শিশুদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য দাবি জানিয়েছেন দর্শনার্থীরা। 

সেতুতে দায়িত্বে থাকা দুমকি থানার পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক জানান, সেতুর দুই পাড়ে দুমকি উপজেলা ও বাকেরগঞ্জ সহ বেশ কয়েকটি উপজেলার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র পায়রা সেতু। ঈদের দিন থেকে শত শত মানুষকে সামাল দিতে হচ্ছে। অনেক শিশু-কিশোর বাইকার উপচে পড়া পর্যটকদের মধ্যে সীমালঙ্ঘন করে আসার চেষ্টা করছেন, তাদের প্রতিহত করতে আমরা সবোর্চ্চ চেষ্টা করছি। তবে এসব মানুষের উপচে পড়া ভিড় ঠেকাতে আমাদের অনেক হিমশিম খেতে হচ্ছে। 

এদিকে সেতুটি উন্মুক্ত হওয়ার কয়েক বছর ধরে ব্যস্ততম সড়কে জনসাধারণের পারাপারে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে মনে করছেন স্থানীয়রা। 

এ অবস্থায় দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর দক্ষিণ পাড়ে টোল প্লাজার আগে স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের রাস্তা পারাপারের জন্য একটি ওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানান।

ইমরান

×