
ছবি: সংগৃহীত
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১০ নং ফতেপুর পূর্ব ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ ঠেটালীয়া গ্রামের মোল্লা বাড়িতে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকাল ৯টার সময় এ ঘটনাটি ঘটে। তবে এটি আত্মহত্যা নয় বলে নিহতের পরিবারের দাবি। তাদের ধারণা, রুনার স্বামী তাকে হত্যা করে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে। ফলে এটি একটি রহস্যজনক মৃত্যু হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।
সরেজমিনে জানা যায়, দক্ষিণ ঠেটালীয়া গ্রামের মরহুম সামছুল হক মোল্লার ছেলে মোঃ আব্দুল হাকিম মোল্লা (৩৮) প্রায় ৫-৬ মাস আগে একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড ঠাকুর কান্দি ভুইয়া বাড়ির মোঃ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার একমাত্র কন্যা রুনা আক্তার (২১)-এর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
৩১ মার্চ ২০২৫, সোমবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায়ের জন্য সকাল সাড়ে ৮টায় রুনার স্বামী মোঃ আব্দুল হাকিম মোল্লা ঈদগাহে যান। নামাজ শেষে খবর পান, তার স্ত্রী ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। দ্রুত বাড়ি ফিরে তিনি হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখতে পান।
এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এবং লোকজন ভিড় জমায়। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে মতলব উত্তর থানার পরিদর্শক প্রদীপ মণ্ডল, এসআই দেলোয়ার হোসেন ও এসআই মিজানুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠান।
এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার কথা বললেও, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে, মৃতের স্বজনরা এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছেন।
নিহত রুনার ভাই মোঃ শরীফুল ইসলাম বলেন, "আমার বোন আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমার বোনকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই এবং হত্যা মামলা দায়ের করবো।"
এদিকে, ঘটনার পর থেকেই রুনার স্বামী হাকিম মোল্লা গা-ঢাকা দিয়েছেন, যা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এলাকাবাসীর মধ্যেও এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ও কানাঘুষা চলছে।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রবিউল হক জানান, "সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার ১০ নং পূর্ব ফতেপুর ইউনিয়নের ঠেটালীয়া এলাকা থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিহতের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চেয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।"
এম.কে.