ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

ফেরত আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক এর ২৫ বিলিয়ন ডলার!

প্রকাশিত: ১৫:২৯, ৩১ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২১:৫৬, ৩১ মার্চ ২০২৫

ফেরত আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক এর  ২৫ বিলিয়ন ডলার!

ছবি : সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব অর্থ ফেরত আনতে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সম্প্রতি আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।  

 


আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক ১১টি প্রভাবশালী পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চালাচ্ছে, যাদের বিদেশে কোটি কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে একটি পরিবারই প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে বলে দাবি করা হয়েছে। একটি ব্যাংক থেকে তাদের তোলা অর্থের পরিমাণ ব্যাংকটির মোট আমানতের ৯০% যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি দেউলিয়াত্বের মুখে।  

 

 


বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর জানান, পাচারকৃত অর্থের বড় অংশ যুক্তরাজ্য, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে জমা হয়েছে। বিশেষ করে লন্ডনে বাংলাদেশি প্রভাবশালীদের ব্যাপক সম্পদ রয়েছে। এসব অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ব্রিটিশ সরকার, কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট ও আইনি সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে।  

 


আল জাজিয়ারার আগের একটি তদন্তে উঠে এসেছিল, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার পরিবারের লন্ডন ও দুবাইতে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সম্পদ রয়েছে। শুধু লন্ডনেই তাদের ৩৬০টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট আছে। বাংলাদেশ দুর্নীতিদমন কমিশন (দুদক) ইতিমধ্যে তার ৪০টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে এবং তাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে সাইফুজ্জামান দাবি করেছেন, এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা এবং তার সম্পদ বৈধভাবে অর্জিত।  

 


গভর্নর আহসান মনসুর বলেছেন, শুধু পাচারকারীদের নয়, তাদের সহযোগী আইনজীবী, ব্যাংকার ও রিয়েল এস্টেট এজেন্টদেরও তদন্তের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, "অপরাধীদের পুনর্বাসনে সহায়তা করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া নৈতিক দায়িত্ব।"  

  
যুক্তরাষ্ট্রে প্রশাসন পরিবর্তনের পর এ তদন্তে কিছু বাধার সৃষ্টি হয়েছে। ইউএসএআইডি’র তহবিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে তদন্তকারী মার্কিন সংস্থাগুলোর কাজ বন্ধ হয়েছে। গভর্নর এটিকে "দুর্ভাগ্যজনক" বলে উল্লেখ করেছেন।  

 


পাচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহে সহযোগীদের সঙ্গে দরকষাকষি এবং সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার কথাও ভাবছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত পেতে ৫ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে মনে করেন গভর্নর।  

 


বিদেশে পাচার হওয়া বাংলাদেশের অর্থ ফেরত আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই তৎপরতা ইতিবাচক বলে মনে করা হচ্ছে। তবে আইনি জটিলতা, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ঘাটতি এবং সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া এ ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। সফল হলে এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।  

সূত্র:https://youtu.be/MZPso2Epo8E?si=nzMnwQylW0UvUDo2

আঁখি

×