ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

ঢাকার মাওনা থেকে সড়কপথে বাসে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় রংপুর

তাহমিন হক ববি, নীলফামারী

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ৩০ মার্চ ২০২৫

ঢাকার মাওনা থেকে সড়কপথে বাসে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় রংপুর

ঈদে বাড়ি ফেরা মানুষের ঢল নেমেছে সড়কপথে। যাত্রাপথের কষ্ট বলতে কিছু নেই। গাড়ির চাপ থাকলেও নিয়ন্ত্রিত গতিতেই চলছে যানবাহন। নেই যানজটের ঝুঁকি। আজ রবিবার (৩০ মার্চ) ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত শত শত মানুষ বাস, ট্রাক ও পিকআপভ্যানে করে বাড়ি ফিরছেন।

ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পিকআপভ্যান ও ট্রাকে চড়ে রংপুর বিভাগের হাজারো নারী-পুরুষ বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। এছাড়া বাস, মাইক্রোবাসসহ ছোট গণপরিবহনেও যাত্রীরা ফিরছেন।

রংপুর নগরীর মডার্ন মোড়ে মারুফা আক্তার জিমি নামে এক যাত্রী জানান, তিনি গাজীপুরের মাওনা থেকে ফাইভ স্টার পরিবহনে করে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় রংপুরে এসে পৌঁছেছেন। চন্দ্রা থেকে রংপুর পর্যন্ত কোথাও বড় যানজটে পড়তে হয়নি, যা এবারের যাত্রায় সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক বলে জানান তিনি।

আরেক যাত্রী আফজাল হোসেন জানান, তিনি ঢাকা থেকে নীলফামারী এসেছেন মাত্র সাত ঘণ্টায়। সড়কে কোনো যানজট ছিল না। এজন্য তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান এবং দায়িত্বে থাকা পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সদস্য ও সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

দীর্ঘ যাত্রাপথে অসুস্থ হওয়া যাত্রীদের সেবা দিতে র‍্যাব ও পুলিশ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে। ঘরমুখো যাত্রীদের সমস্যা ও ভোগান্তি কমাতে রংপুর মডার্ন মোড়ে অস্থায়ী সেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং প্রস্তুত রাখা হয়েছে অ্যাম্বুলেন্স। এই সেবা ঈদের পরবর্তী সপ্তাহ পর্যন্ত চালু থাকবে বলে জানিয়েছে জেলা র‍্যাব ও পুলিশ।

সাভার থেকে নীলফামারীর জলঢাকায় ট্রাকে চড়ে আসা জয়নাল মিয়া জানান, ৫০০ টাকায় ভাড়া দিয়ে তিনি ট্রাকে উঠেছেন এবং আসতে সময় লেগেছে আট ঘণ্টা। তার মতো অনেকেই গার্মেন্টস শ্রমিক ও অন্যান্য চাকরিজীবী ট্রাকে করে ফিরছেন। তিনি বলেন, "ট্রাকে যেতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু কিছু টাকা বাঁচাতে পারলে বউ-বাচ্চা নিয়ে ভালো কিছু খাওয়া যাবে।"

ট্রাকচালক আজিজ মিয়া বলেন, "ঈদে ট্রাক চালাতে চাই না, কিন্তু যাত্রীরা ধরনা দেয়। জনপ্রতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছি। মালামাল থাকলে সেটা বিনামূল্যে নিয়ে আসি। সবাই পরিবার নিয়ে ঈদ করতে চায়, তাই সুযোগ করে দিচ্ছি।"

রংপুর অঞ্চলে হাইওয়ে পুলিশ সর্বাত্মক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ফলে এই বিভাগের ঘরমুখো মানুষ নিরাপদ, আরামদায়ক ও স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রা উপভোগ করছেন।

হাইওয়ে পুলিশের রংপুর রিজিয়নের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: গোবিন্দগঞ্জ বাজার, মায়ামনি মোড়, পলাশবাড়ী, মিঠাপুকুর, শঠিবাড়ী, পীরগঞ্জ বাজার, সৈয়দপুর, দিনাজপুরের ১০ মাইল এলাকা।

এছাড়া টহল পার্টির সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে এবং পুলিশের সব কার্যক্রম কঠোর নজরদারির আওতায় রাখা হয়েছে, যাতে বগুড়া-রংপুর-সৈয়দপুর-দশমাইল-বাংলাবান্ধা ২৫০ কিলোমিটারের মহাসড়কটি যানজট ও অপরাধমুক্ত থাকে।

হাইওয়ে পুলিশের রংপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, "এবারের ঈদযাত্রা নিরাপদ, যানজটমুক্ত এবং আরামদায়ক হবে, ইনশাআল্লাহ।"

নুসরাত

আরো পড়ুন  

×