ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ এপ্রিল ২০২৫, ১৯ চৈত্র ১৪৩১

আজ মতলবের ১৮টি গ্রামে আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপিত

কামাল হোসেন খান, মতলব উত্তর, চাঁদপুর

প্রকাশিত: ১৫:০৮, ৩০ মার্চ ২০২৫

আজ মতলবের ১৮টি গ্রামে আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপিত

ছবিঃ সংগৃহীত

সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে মিল রেখে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১৮টি গ্রামে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে আগাম পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।

আজ রোববার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ টার সময় উপজেলার সাড়ে পাঁচআনী জামে মসজিদ সংলগ্ন ঈদগাহ ময়দানে পবিত্র ঈদুল ফিতর এর প্রথম জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় মোহনপুর ইউনিয়নের আইঠাদি পাঁচআনী (পাঁচআনী গায়েবি মাজার সংলগ্ন পাঁচআনী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ঈদগাহ ময়দানে) সকাল ১০ টায়। এতে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা মোঃ মোছাচ্ছির খান। এরপর তৃতীয় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় মোহনপুর ইউনিয়নের দেওয়ান কান্দি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ১০ টায়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা মোঃ আরিফ ইসলাম। এসময় এসব ঈদের জামায়াতে আশেপাশের গ্রামের মুসুল্লিরা অংশগ্রহণ করেন। নামাজ শেষে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ, দেশের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। এসব ঈদের জামায়াতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য মতলব উত্তর থানা পুলিশ প্রতিটি ঈদগাহে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এদিকে, প্রতিটি ঈদগাহে ঈদের জামায়াত আদায়ের পর একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও নামাজ শেষে মিষ্টি মুখ করেন তারা।

মতলব উত্তর উপজেলার ১৮টি গ্রামে যেসব স্থানে আগাম পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়েছে, সেগুলো হলো: উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পাঁচআনী, বাহেরচর পাঁচআনী, আইটাদি পাঁচআনী, দেওয়ানকান্দি, লতুর্দী, সাতানী ও দক্ষিণ মাথাভাঙ্গার আংশিক, সাদুল্যাপুর ইউনিয়নের আমিয়াপুর গ্রামের একাংশ, ইসলামবাদ ইউনিয়নের মধ্য ইসলামবাদ গ্রামের একাংশ, ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের একাংশ, এখলাছপুর ইউনিয়নের মধ্য এখলাছপুর (বড়ইকান্দি) গ্রামের একাংশ এবং ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের ফরাজীকান্দি, রামদাশপুর, চরমাছুয়া, হাজিপুর, দক্ষিণ রামপুর, সরকারপাড়া ও ঠাকুরপাড়া গ্রামগুলোর একাংশ মুসলমানরা ঈদ উদযাপন করে।

দেওয়ানকান্দি গ্রামের সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন ডালিম বলেন, "আমরা চট্টগ্রামের মির্জাখিল দরবার শরীফের অনুসারী হিসেবেই প্রতি বছর সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে রোজা ও ঈদ উদযাপন করে আসছি। এবারও সৌদির সাথে মিল রেখে এভাবে সঠিক সময়ে ঈদ উদযাপন করছি।" তিনি আরও বলেন, "ইমাম আবু হানিফার মতাদর্শে বিশ্বের যেকোনো দেশের আকাশে চাঁদ দেখা গেলে ঈদ উদযাপন করতে হবে। ১২০০-১৩০০ বছর আগে চাঁদ দেখার খবর পেতে দেরি হওয়াতে একদিন পর ঈদ হতো। কিন্তু এখন তথ্য প্রযুক্তির যুগে চাঁদ উঠার খবর মুহূর্তে জানা যাচ্ছে। তাই যেকোনো জায়গায় চাঁদ দেখা গেলেই ঈদ উদযাপন করা উচিত।" তাই দীর্ঘদিন ধরে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করি।

জানা গেছে, প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ২৯২৮ সালে আগাম রোজা রাখাসহ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালনের নিয়ম চালু করেন সাদ্রা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইসহাক (রাঃ)। তার অনুসারীরা প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে সৌদির সাথে মিল রেখে আগাম রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করা শুরু করেন। সেই থেকে বেশ কিছু গ্রামের বাসিন্দারা আরব দেশসমূহের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা এবং ঈদসহ ধর্মীয় উৎসব পালন করে আসছেন।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রবিউল হক বলেন, "সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সাথে মিল রেখে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ১৮টি গ্রামে আজ রোববার আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ যাতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করা যায়, সেজন্য মুসুল্লিদের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিলো।" তিনি উপজেলাবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
 

মারিয়া

×