
ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেট সেজে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জরিমানা করতেন প্রতারক মিনহাজ, সহযোগিতায় ছিলেন ইউএনও স্ত্রী জিনিয়া
নরসিংদীর শিবপুরে আলোচিত একটি প্রতারণার ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিনিয়া জিন্নাতের কথিত স্বামী আশরাফুজ্জামান মিনহাজ ওরফে মিনহাজউদ্দিন নিজের পরিচয় গোপন রেখে কখনো ম্যাজিস্ট্রেট সেজে বেরিয়ে পড়তেন মোবাইল কোর্ট পরিচালনায়। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি প্রটোকলের গাড়ি ও গানম্যান ব্যবহার করে তিনি নিয়মিত মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জরিমানা আদায় করতেন। এসব কর্মকাণ্ডে তার সহযোগী ছিলেন ইউএনও জিনিয়া জিন্নাত।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি জিনিয়া জিন্নাত শিবপুরের ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নেন। এরপর থেকেই কথিত স্বামী মিনহাজ তার স্ত্রীর ক্ষমতা ব্যবহার করে সরকারি গাড়ি ও প্রটোকল ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতে থাকেন। মিনহাজ এমনভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন যে, সাধারণ মানুষ তাকে প্রকৃত ম্যাজিস্ট্রেট বলেই মনে করত।
এই ভুয়া মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিবাদ করেন সরকারি গাড়িচালক রুবেল। কিন্তু প্রতিবাদ করায় উল্টো মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। রুবেল অভিযোগ করেন, বরখাস্ত হওয়ার আট মাস আগেই তার বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয়, যার পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ টাকার মতো। এমনকি গ্যাস স্টেশন থেকে গ্যাস নেওয়ার জন্য তার স্বাক্ষরও জাল করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সরকারি গাড়ি মেরামত ও জ্বালানির অর্থ পরিশোধ না করায় অভিযোগ ওঠে জিনিয়া জিন্নাতের বিরুদ্ধে। ‘দেলোয়ার ইঞ্জিনিয়ারস’-এর মালিক জানান, প্রায় পাঁচ লাখ টাকা বাকি রয়েছে তাদের কাছে, কিন্তু ইউএনও কোনো বিল পরিশোধ করেননি। একইভাবে স্থানীয় ‘ভুইয়া সিএনজি ফিলিং স্টেশন’-এর ম্যানেজার রাখালচন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বেশি বিল বাকি রেখেছেন তারা এবং বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও কোনো সাড়া মেলেনি।
চালক রুবেলের স্ত্রী চাকরি ফিরে পেতে জিনিয়া জিন্নাতের কাছে আবেদন করলেও, তার মন গলেনি। যদিও এসব গুরুতর অভিযোগের বিষয়ে জিনিয়া জিন্নাত দাবি করেছেন, সবই ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এদিকে প্রতারণা, রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসী মামলায় আশরাফুজ্জামান মিনহাজ বর্তমানে শরীয়তপুর কারাগারে আটক রয়েছেন।
সূত্র ঃ https://www.youtube.com/watch?v=4vl4OhnO8No
রাজু