ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ চৈত্র ১৪৩১

পানির অভাবে বোরো চাষ ব্যাহত, বিপাকে কৃষক

কাজী খলিলুর রহমান, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: ০১:১২, ৩০ মার্চ ২০২৫

পানির অভাবে বোরো চাষ ব্যাহত, বিপাকে কৃষক

পানির অভাবে লাল হয়ে যাচ্ছে বোরো খেত

পানি সংকটের কারণে বোরো খেতে সময়মতো সেচ দিতে পারছেন না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার চাষিরা। বোরো খেতে থোড়ধান। এ সময় সেচের প্রয়োজন বেশি। পরিমিত সেচ দিতে না পারলে ধানে বেশি চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু জলাশয়গুলো শুকিয়ে গেছে প্রায়। এই পরিস্থিতিতে সেচ সংকটে পড়েছেন বোরো চাষিরা। পলি পড়ে ভরাট হয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে জলাশয়গুলো। 
জলাশয়গুলো ভরাটের কারণে বছরের প্রায় অর্ধেক সময় কর্মহীন কৃষক মাঠে অক্লান্ত শ্রম দিয়েও তাদের স্বপ্নের ফসল ঘরে তুলতে পারছেন না, চৈত্র-বৈশাখ মাসে সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাশয়গুলোর আশপাশের বোরো জমি পানিতে তলিয়ে যায়, সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এই এলাকা কৃষিনির্ভর হলেও জলাশয়গুলোতে পানি সংকটের কারণে অনেক সময় বৃষ্টির ও জোয়ারের ওপর নির্ভর করে সেচ কাজ চালাতে হচ্ছে এলাকার কৃষকের। 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ২০ একরের ঊর্ধ্বে ১২টি জলাশয় ভূমি অফিসের তালিকাভুক্ত। আর ২০ একরের মধ্যে জলাশয় রয়েছে ১৭টি। প্রশাসন থেকে এগুলো ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খনন না করায় এসব জলাশয় পলিমাটি পড়ে ভরাট হতে চলেছে। এসব জলাশয় শুকিয়ে মৃতপ্রায় অবস্থা হয়েছে।

জলাশয়গুলোর ওপর নির্ভরশীল চার হাজার হেক্টর জমি থাকলেও পানি সংকটের কারণে ঠিকমতো সেচ দিতে পারছেন না কৃষক। বিশেষ করে বালিয়াদহ, গালাচিপা, চন্দনবিল, ডেপারবিল, জয়কালীপুর গ্রুপ ফিশারিজ, মানিকপুর গ্রুপ ফিশারিজ, সাতবিলা বিল এলাকায় সেচ সংকট তীব্র আকার ধারণ করে বোরো মৌসুমে। দীর্ঘদিন ধরে জলাশয় খনন না করার কারণে পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে।

ফলে কৃষক সেচের পানির জন্য গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। বৃষ্টি ও জোয়ারের ওপর নির্ভর করে বোরো খেতে সেচকাজ চালাতে হচ্ছে অনেকের। জমিতে সময়মতো সেচ দিতে না পারায় কাক্সিক্ষত ফলন ঘরে তুলতে পারছেন না কৃষক।
চাষিরা জানান, থোড়ধানে পরিমিত সেচ দরকার। এখন পানি সংকটে সেচ দিতে পারছেন না। এই সময় ঠিকমতো সেচ দিতে না পারলে ধান বেশি চিটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ঝুনারচর গ্রামের কৃষক কবির হোসেন জানান, পানি সংকটের কারণে বিলের আশপাশের বোরো খেতে সেচকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিনের সঙ্গে।

তার ভাষ্য, ফরদাবাদ, রুপসদী, ছলিমাবাদেরসহ বিভিন্ন বিল শুকিয়ে গেছে। পানি সংকটের কারণে সময়মতো জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষক। এতে আশানুরূপ ফলন পান না। জরুরি ভিত্তিতে জলাশয়গুলো খনন করা দরকার।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসী আরা জানান, পলিমাটি পড়ে ভরাট হওয়া জলাশয়গুলো খননের জন্য তাদের কাছে কোনো প্রস্তাব চাওয়া হয়নি। খননের জন্য যখনই তালিকা চাওয়া হবে তখনই জলাশয়ের তালিকা পাঠানো হবে।

×